মায়ায় বাঁধি, ভ্রমে সাধি

 
আমি ভালো নেই, তবু বেঁচে তো আছি! এ-ইবা কম কীসে!


আচ্ছা, আমি কি কখনও কিছু চেয়েছি তোমার কাছে? যেমন ভালোবাসা, সময়? কিংবা চেয়েছি কখনও যে তুমি আমাকে মেসেজ দাও বা তুমি আমাকে ফোন দাও বা তুমি আমার সাথে দেখা করো…কিছুই তো চাইনি। আমি তোমাকে তোমার সবকিছু নিয়েই ভালোবেসেছি। প্রত্যাশা ছিল না কোনও। কখনওই না! হুম…স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, একটা আশা অবশ্য ছিল মনে মনে, আর সেটা হলো...তুমি কিছু পারো না পারো, অন্তত আমার ভালোবাসাটা বুঝবে। এটাই আশা ছিল। ব্যস্‌! কিন্তু বিশ্বাস করো, বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে ওটাও কমে গেছে, কারণ আমার কেমন যে লাগে, তা আমি কাউকেই বলে বুঝাতে পারব না। পুরোপুরিই ওলটপালট হয়ে গেছে জীবনটা। উনি আমার সবচেয়ে বড় শক্তি ছিলেন। সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন তিনি আমাকে। তাঁর পর আর কেউই আমায় ভালোবাসবে না, এটা মেনে নিয়েই থাকতে হবে এখন। খুব কঠিন বাস্তবতার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে দুঃসহ সময়।


আমি আমার মাকে তুমি করে বলি, আর বাবাকে আপনি করে বলতাম। অথচ আমার ভালোবাসাটা বাবার জন্যই বেশি। খুব ইচ্ছে করে, (মনে মনে) ১০টা মিনিট তোমার বুকে মাথা রেখে খুব চিৎকার করে কাঁদি। খুব ইচ্ছে করে…কিন্তু আমি কখনও বলিনি তোমাকে। হয়তো এটা আমার অন্যায় আবদার তোমার কাছে…আমার একটা স্বপ্নের কথা বলি আজ তোমাকে...আমার খুব ইচ্ছে, আমাদের দুজনের নামে এমন একটা কিছু করা যেখান থেকে সমাজের অসহায়, দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত মানুষ উপকার পাবে। এটাই আমার ইচ্ছে। প্রায় ৫ বছর ধরে এটা মনে লালন করছি। কাউকে বলিনি। কেউ জানবে না, জানবে শুধু আমি আর আমার ঈশ্বর। তবু আজ তোমাকে বলে ফেলেছি। আমি ওটা করেও ফেলতাম চুপি চুপি, তুমি জানতেও পারতে না। আশা করছি, আমি কাজটা করব। কোনও কাজই না করে বলতে হয় না, কিছু কাজ করেও বলতে হয় না। কিন্তু তোমাকে না বলে থাকতে পারি না। কিছুই না বলে থাকতে পারি না...আমার কী দোষ! আমি কিছুই চাই না তোমার কাছ থেকে। ভালো থেকো তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষদের নিয়ে।


আচ্ছা, একটা কথা...তোমার লেখায় সব সময়ই সবার জায়গা হয়। কখনও কি আমার জায়গা হয়েছে? উঁহু, না তোমার লেখায়, না তোমার মনে, কোথাও আমার জায়গা হয়নি। জানি, হবেও না। লাগবে না কিছুই আমার…তবু…এইই…ভালোবাসি! আমার কষ্ট হয় যখন তুমি অন্য কাউকে প্রাধান্য দাও। আগে হতো না...এখন হয়। কেন, বলো তো? লুকিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে তোমাকে! মিস ইউ…অলওয়েজ! তোমার প্রতি আমার প্রেমের চেয়ে আমার ভালোবাসাটা সত্যি, জানি। মুখে নয়, মন দিয়েই বলছি…তুমি আমার বিশ্বাস, আর এটা মানিও। আমার সবটা জুড়ে শুধু তুমিই আর তুমি। তোমায় ভালোবেসে আজ ভিখিরি আমি!


প্রিয় একটা দিন আজকে। তাই প্রিয় কাউকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হলো। তোমার সাথে দেখা হবার দিন আজকে। যেদিন দেখা হয়েছিল, সেদিন কোনও কথা হয়নি ভালোবাসার। তাই ৪ লাইন লিখে ফেলেছি তোমার জন্য…
প্রেমের চেয়ে ভালোবাসাটা সত্যি বলে জানি,
মুখে নয়, মন দিয়েই তুমি আমার বিশ্বাস, মানি।
আমার সবটা জুড়ে যখন তুমিই আর তুমি,
তোমায় ভালোবেসে আজ নিঃস্ব বড় আমি!


উপরের এই চারটা লাইন তোমাকে নিয়ে লিখেছিলাম। তুমি পড়েছিলে। আসলে কী লিখব, কেন লিখব, লিখে কী লাভ আমার, কী ক্ষতি আমার এইসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে লিখছি। না লেখাটাই মনে হয় ভালো ছিল। তবুও কেন জানি না-চাইতেও আমার হাত জিতে যেতে চাইছে আমার মন এর কাছে। জানি না, কেন! কারণটা জানলেও আমার কিছু হবে না। আমি এরকমই থেকে যাব সবকিছুর পরও! তোমাকেই ভালোবেসে যাব। সামনের জুন মাসে ৬ বছর হবে। কীসের ৬ বছর? বলছি। তোমাকে চেনার, তোমার সাথে ফেসবুকে পরিচিত হবার। কীভাবে জানি এতগুলো বছর হয়ে গেল! ৬ বছর অনেকের বিয়ে টিকে না, অনেকের বন্ধুত্ব টিকে না, অনেকের প্রেমও টিকে না। টিকে হয়তো…তবে এমন একতরফা স্টাইলে মনে হয় কমই টিকে। আর সেখানে ৬ বছর আমার এই অনুভূতি টিকে আছে! কিছুই নেই যেখানে, সেখানে মনে মনে বছরের হিসেব রাখাটাকেও মনে হয়...থাক, বাদ দিলাম! বাদ দিই, দিলাম, বেঁচে থাকতে চাইলে আমাদের অনেক কিছুই বাদ দিয়েই সামনের দিকে যেতে হয়। বেঁচেথাকার মানেই হলো বাদ দেওয়া আর ছেড়ে দেওয়া।


বাবা মারা গেলেন আজ প্রায় দুই বছরের বেশি হবে। জুনের ১৭ তারিখ। মারা যাবার কিছুদিন আগে তোমার সাথে কথা হয়েছিল আমার। মনে হয়, তার ৯/১০ দিন আগে কথা হয়েছিল আমাদের। তুমি তখন বলেছিলে, তুমি আসবে আমার শহরে বেড়াতে। আমি আবার তোমার কথা সত্যি মনে করে বাবাকে বলেছিলাম, আব্বু, আমার ওই স্যার না আসবেন আমাদের এখানে বেড়াতে। তো আব্বু খুব খুশি হয়ে বলেছিলেন, তোমার স্যার আসবে, আমি নিজহাতে বাজার করব। তোমার স্যার কী পছন্দ করেন, সব রান্না হবে। আমি বাজার করব। আমি বলেছিলাম, আচ্ছা আব্বু, করবেন, সময় আছে। উনি জানাবেন কবে আসবেন। বাবা এর কিছুদিন পরেই চলে গেলেন, তোমার সাথে আর দেখা হলো না বাবার। আমাকে সবচাইতে বেশি ভালোবাসতেন যে মানুষটা, আমার বাবা, তাঁর সাথে তোমার আর পরিচয় করানো হলো না। আর হবেও না। আমাদের অনেক কিছুই করা হয় না, অনেক জায়গায় যাওয়া হয় না, অনেকের সাথে দেখা হয় না…সময়ের অভাবে বা ‘আমার সময় আছে কিন্তু কেন দিব’, এমন চিন্তাভাবনায়। থাক, ব্যাপার নাহ্‌! বাঁচতে হলে প্রায়ই ইচ্ছেয় বা অনিচ্ছেয় বলতে হয়…ব্যাপার নাহ্‌!


তোমার সাথে আমার যখন পরিচয়, সেই প্রথম থেকেই যে তোমার প্রেমে পড়ে গেছি বা তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি, তা কিন্তু না। কিন্তু কোথাও তোমার বদনাম করিনি। তোমার কোনও কিছু ভালো না লাগলেও সেটা নিজের মনের ভিতর রেখেছি। আমি প্রকাশ করতে পারি না। নিজের ভিতরই রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু আজকাল কেমন যেন সব বলে ফেলি। উচিত না বলা, তবুও ফেলি। দেখো, তোমার সাথে পরিচয়ের প্রথমদিন থেকে আজ অবধি তোমার কোনও রকমের ক্ষতি আমি করিনি, সেটা আমি দাবি নিয়ে বলতে পারি। কিন্তু কেন জানি না, কিছু মানুষ থাকে যারা অন্যের পেছনে লেগে থাকতে পারে, অন্যের পা ধরে টেনে পিছিয়ে দিতে পারে। ওরা তোমার কাছে আমি যে কথাটা বলিইনি, সেটাও বলেছে আমার নাম দিয়ে। থাক, বাদ দিই! তবে চাইলেও আবার অনেক কিছু বাদ দেওয়াও যায় না। আমি মন থেকে বলতে পারি একটা কথাই…যে বা যারা কথালাগানো বা টেনেপিছানো এসব কাজ করে, এদের মধ্যে ভালোবাসার কমতি আছে। মানুষকে ভালোবাসার মতো গুণ যার মাঝে নেই, সে যেকোনও অন্যায় কাজই করতে পারে। বড় ধরনের অপরাধও করতে পারে।


তো প্রথমদিককার কথায় আসি। তোমাকে প্রথমে দেখতাম মেয়েদের সাথে ছবি তুলতে, সবার ছবিতে লাইক দিতে। আবার অনেক মেয়ের ছবিও তুলে দিতে। আমার না এইসবে কিছুই এসে যেত না। হিংসাও লাগত না, কারণ মনে কিছু ছিল না, তাই। তোমাকে একবার বলেছিলাম এক মেয়েকে ব্লক দিতে। তুমি তো দিলেই না, উল্টা আমাকে বকা দিয়েছ। হা হা হা! এইবেলায়ও ওই মেয়ে জিতে গেছে। যাক্‌, আবারও ব্যাপার নাহ্‌! অথচ দেখো, ওই মেয়েটাই তোমার বিপদের সময় তোমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেছিল। তোমার মনে আছে তোমার জন্মদিনে বাচ্চাদের নিয়ে একটা প্রোগ্রাম করেছিলাম, তার কথা? আচ্ছা, একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখবে? কথাগুলো তো আমি তোমাকে বলেছিলাম, আর ছবিও পাঠিয়েছিলাম তোমাকে ইনবক্সে। সেটা যে তুমি পোস্ট করে দিবে, তা কী করে আমি জানব, বলো? কিন্তু আমি কিছু জানার আগেই তুমি পোস্ট করে দিয়েছ। এটা নিয়েও আমাকে কিছু মানুষ ভুল বুঝল। বলল, কারও জন্য কিছু করলে সেটা পোস্ট দিয়ে বলতে হয়! আচ্ছা, বলো তো, পোস্টটা কে দিয়েছে? আমি, না তুমি? তা হলে আমি কোথায় কী বললাম? আমি শুধু তোমাকেই বলেছিলাম সব। কারণ সেটা ছিল তোমার জন্য আমার পক্ষ থেকে তোমার জন্মদিনের উপহার। আমি গিফট দিলে তুমি নাও কি না নাও, তাই ভাবলাম, গিফট দিব, তবে ভিন্নভাবে। মাথায় প্ল্যান এল, বাচ্চাদের সাথে নিয়ে তোমার জন্য দোয়া চাই, তাদের ভালোমন্দ কিছু খাওয়াই। তাদের দোয়া আল্লাহ্‌ কবুল করবেন সবার আগে। বাচ্চারা তো ফেরেশতা হয়, তাদের দোয়া তো সবার আগে কবুল হয়, তাই কাজটা করেছি। এর বাইরে আর কোনও চিন্তা আমার মাথায় ছিল না। কিছু আজব মানসিকতার লোকজনের সাথে আমরা বাস করি। আমরা যা ভাবি, তা জেনে, অর্ধেক জেনে, না জেনে ওরা নিজেদের মতো করে আমাদের নিয়ে কথা বলতে থাকে, বলতেই থাকে।


বিশ্বাস করো, সেই সেদিন থেকে আজও তোমার প্রতি কোনও খারাপ চিন্তা আসেনি। যা-ই হোক, এইসব আমি বলতে চাই না। আমি চাই চুপ থাকতে, কিন্তু কেন যে আমার হাত আজ চুপ থাকছে না, বুঝছি না। তাই বিরক্ত লাগছে। আমি চাই না তোমাকে কিছু বলতে, আমি চাই না তোমার দামি সময় নষ্ট করতে।


তুমি ১৫ দিন ধরে আমার ফ্রেন্ডলিস্টে নেই। আমিই ব্লক দিয়েছি তোমাকে। আর শুনো, এই দুনিয়ায় কারও জন্য কারও জীবন থেমে থাকে না। সেখানে আমার জন্য তোমার জীবন, ফেসবুক কোনও কিছুই থেমে থাকবে না। তাই আমার জায়গায় (মানে ফ্রেন্ডলিস্টে) অন্য কেউ আসুক। অন্য কেউ ভালোবাসুক তীব্রভাবে। যদিও তোমাকে অনেকেই ভালোবাসে তীব্রভাবে, এরকমই আমি পড়েছি তোমার লেখায়। ওই যে কী যেন লেখাটা...গোধূলির অন্য লগনে…না কি যেন লেখাটা, নাম মনে নেই।


যা-ই হোক, ধরেই নিই, তোমার অনেকেই আছে তীব্রভাবে ভালোবাসার, তোমাকে ভালোরাখার, তোমার সাথে দেখাকরার যোগ্য, আর তোমাকে ফোনদেবার যোগ্য তো বটেই। তারাই তো সবার আগে। আরে ভাই, আর কাকে লাগে জীবনে, এমন মানুষরা থাকতে! তাই তোমার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে দুই-একটা আমার মতো মানুষ সরে গেলে কী এমন হবে! আমি বলি কী, তোমার জীবন প্রতিদিনই ভালোবাসায় কাটুক আর এদের ভালোবাসায় সিক্ত হও তুমি। আরে ভাই, জীবন আর কয় দিনের, বলো? এখানে স্বার্থ ছাড়া কেউ তোমাকে ভালোবাসবে, কেউ তোমার ফোন না পেয়ে তোমার পথচেয়ে থাকবে, তুমি ইনবক্সে তার ছবি দেখতে না চাইলেও তোমার ছবি দিয়ে তার মোবাইল ভরে রাখবে, দুপুরবেলা সে খেয়েছে কি না এটা না জানতে চাইলেও কেউ তোমাকে তার মোনাজাতে রাখবে…এরকমও হয় কিন্তু! যা-ই হোক, এই শ্রেণীর মানুষ হচ্ছে পাগল। সেটা দিয়ে তুমি কী করবে? মালা গাঁথবে? আরে না ভাই, তুমি বরং তাদের নিয়েই থাকো যাদের জন্য তোমার মন, প্রাণ, চোখ কাঁদে।


জানো, বাবা মারা যাবার পর এক সিনিয়র বন্ধু আমার খোঁজ নিত প্রায়ই। আমি ভাত খেয়েছি কি না, ওষুধপত্র খেয়েছি কি না, ঠিক আছি কি না। আমি তোমাকে ওঁর কথাই বলেছিলাম। মনে আছে? ওই যে সেই মানুষটা, যার একটা অতীত আছে…বলেছিলাম না? ওঁর সাথে দেখাও হয়েছিল, সেটাও তোমাকে বলেছিলাম। দেখো, একটা মানুষকে আমি ভালোবাসিনি, ফোনও দিইনি, আর তিনি কোনও দিন আমার প্রার্থনাতেও ছিলেন না। তবুও তিনি নিজে আমার খোঁজ নিয়েছেন। শুধু এই একটা কারণে আমি দেখা করেছিলাম ওঁর সাথে। ভদ্রতার খাতিরে। যা-ই হোক, ওঁর সাথে আমার আর দেখা হয়নি। উনি জানেন, আমি একজনকে তীব্রভাবে ভালোবাসি। কিন্তু ব্যক্তিটা কে, সেটা উনি জানেন না। আমি নাম বলিনি। উনি বলেছেন আমাকে, চৈতি, তুমি যাকে ভালোবাস, সে অনেক লাকি!


আচ্ছা, তোমাকে এত কিছু বলছি কেন? আমার সত্যিই ইচ্ছে নেই নিজেকে ব্যাখ্যা করার, তাও আবার তোমার কাছে! আচ্ছা, তুমি তো কাশ্যপগোত্রের, তাই না? তোমার ওই বিপদের সময় তোমার ছোটবোনের কাছ থেকে জেনে নিয়েছিলাম। ওই সময়টায় না আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা কিছুই বাদ দিইনি যেখানে তোমার জন্য প্রার্থনা করাইনি। আমার এক বন্ধু হিন্দু। তাকে খরচ দিয়ে, সব কিছু দিয়ে বলেছিলাম, তুই তোর দাদার জন্য প্রার্থনা কর। সব মন্দিরে, যেখানেই পুরোহিত দোয়া করায়, সেখানেই যা। সে গিয়েছিল আর তোমার গোত্র লাগবে, জানিয়েছিল। পরে সেটাও বলে দিয়েছিলাম তাকে। আমি বলিনি এটা তোমাকে? আচ্ছা, কেন তোমাকে সব বলতেই হবে? তোমার কাছ থেকে পাত্তা পাওয়ার জন্য? তোমার পাত্তা নিয়ে তুমি থাকো আর মোটুর মতো ফুলো! ওতে আমার বিন্দুমাত্রও কিছু এসে যায় না। তোমার ভালোবাসা আমার লাগবে না। ওটা তাদেরকেই দিয়ো, যাদের আজকাল তোমার লেখায় বেশি পাওয়া যায়। পৃথিবীতে কিছু মানুষের ভালোবাসার ক্ষমতা অসীম ও নির্লজ্জ! আমি ওদেরই দলে।


আচ্ছা শুনো, আম্মু যদি কখনও তোমাকে ফোন করে আমার বিয়ের দাওয়াত দেয়, তবে এসো। আম্মুর অনেক প্রিয় তুমি। আর আমার বিয়ের কোনও ঠিক নেই। নাও করতে পারি। আর শুনো, তোমার আর সময় নষ্ট করব না। ইচ্ছে ছিল, কিছু কবিতার লাইন বলব। কিন্তু থাক, বাদ দিলাম। তোমার সময় নষ্ট করব না আর।


জানো, আমি না অনেক দূরে চলে যাব। এই জীবনে অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এই পৃথিবীতে অনেকে এখনও ভালোবাসে তীব্রভাবে। আজকে তোমার কাছে এত কিছু লিখে আমিই লজ্জিত। কারণ আমি না কারও সাথেই কিছু বলতে চাই না! আমি আর আমার গড, এই আমরা দুইজন কথাবলার নিত্যসঙ্গী। আমি চাই না তোমার লেখায় থাকতে…আর তোমার মনে? তুমি আমার কথা মনেই আনো না যেখানে, সেখানে আমাকে মনে রাখবে? এত বড় মন আল্লাহ্‌ তোমারে দেন নাই। কারণ যদি দিতেন, তা হলে তুমি অনেকসময়ই… আমাকে সময়, ফোন…কোনও কারণ ছাড়াই দিতে। যা-ই হোক, এত লেখার জন্য সরি। সব সময় ভালো লাগত লিখতে, আজ ভালো লাগেনি লিখতে। ভালো থেকো, ভালোবাসায় বেঁচো। জান…ভালোবাসি! (এই লাইনটা ইগনোর করে যেয়ো।)


তুমি একদিন বলেছিলে আমাকে…যদি কখনও ভুল বুঝ তো তুলে একটা আছাড় দিব। আচ্ছা, তুমি কি সত্যি সত্যিই আমাকে আছাড় দিবে? কই, দিচ্ছ না তো! আই অ্যাম ওয়েটিং ফর দ্যাট আছাড় অব ইয়োরস! আচ্ছা, তোমার সাথে যখন একদিন রাগ করে মেসেঞ্জারে ব্লক দিয়েছিলাম, তুমি তার একটু পরেই স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছিলে না…ঝগড়া/ যুদ্ধটা যখন প্রিয় মানুষের সাথে, তখন হেরেযাওয়াটাই জরুরি, আর ঝগড়া/ যুদ্ধটা যখন নিজের সাথে, তখন জিতে যাওয়াটা জরুরি।…জানো, এই কথা না ওইদিন ভালো করে বুঝেছিলাম আমি। বুঝেছিলাম যে আমি তোমার প্রিয়জন না। তাই তুমি হারবেও না আমার কাছে। ভালো! আচ্ছা, আজ যদি আমি নিজেকে জিতিয়ে দিই, তবে কি তুমি আমায় অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে? আজ যদি ভুল করে এই আমি ‘তুমি’ হই, তবে কি ভুল বুঝবে আমায়?


জানো, এত বছরেও যার মনে থাকতে পারিনি, তার লেখায়, ফেসবুকে, এমনকি তার স্মৃতিতেও আমি থাকতে চাই না। মানুষ অনেক বেশি অভিমানী প্রাণী। আবার দেখো, এই মানুষই মানুষকে পাগলের মতো ভালোবাসতে জানে, আগলে রাখে, দোয়ায় রাখে। এই ৫ বছরে কম কথা তো আর জমা হয়নি। তাই আর কত বলব! কিন্তু কেন বলছি বা লিখছি, সেটাই জানি না। আমি কেন তোমাকে ভালোবাসি, আমি সত্যিই জানি না। তোমার প্রতি যদি কখনও রাগ উঠেছে বা কষ্ট পেয়েছি তোমার কোনও কিছুতে, কখনও স্ট্যাটাস দিয়ে বলিনি তোমার বিপক্ষে একটি কথাও। কারণ কী, জানো? আমি যদি স্ট্যাটাস দিয়ে কিছু বলি, আর সেই স্ট্যাটাসে কেউ যদি তোমার বিপক্ষে কিছু বলে, তখন এই আমিই কষ্ট পাব। জানো, ঝগড়াটা না শুধু ইনবক্সেই হয়। একরুমে হয়। কিন্তু আমার ভালোবাসাকে কেউ কিছু বললে তখন আমিই সহ্য করতে পারব না।


তোমাকে কোনও কথাই বলতে ইচ্ছে করে না। কী লাভ বলে! শুনো, আমার এই কথাগুলো কাউকে বোলো না। জানি, বলবেও না। আমি তোমার পোস্টেও থাকতে চাই না। ওভাবে তো আমাকে কখনও রাখোইনি…যদি কখনও ইচ্ছে করে আমার সাথে কথা বলতে, দেখা করতে চলে এসো। তোমার জন্য আমি আছি। আশা রাখি, আমাকে পাবে। যদি বদলে যাই, তবে তখনকার কথা জানি না। তবে বদলে গেলেও পাবে আশা রাখি। জানো, আমি না চলেই গিয়েছিলাম! ওই যে বলেছি না, নিঃশব্দের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া…


শুনো, আমার জান, কলিজা, বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং আমার রাগীমানুষটা! ভালোবাসি, ভালোবাসি…এই এখনও ভালোবাসি। তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসলে বাসো। যাকে খুশি বাসো, যতবার খুশি বাসো। তোমার জীবন, তোমার পছন্দ। কখনও আটকাইনি, আটকাবও না। আমি কে বলার! যে আমি ৫ বছরেও তোমার মনে জায়গা নিতে পারিনি, সেখানে আর কিছু বলেই-বা কী! আবার এটাও দেখলাম, তিন মাসেও অনেক মানুষ আপন হয়ে যায়, প্রিয় হয়ে যায়। সেখানে কোনও কারণ থাকে বোধহয়। কারণ নিয়েই যদি সব কিছু হতো, তা হলে তো ভালোই হতো। তবে আমি শিওর, আমার বেলায় সত্যিই কোনও কারণ ছিল না। আমি তোমাকে ভালোবেসেছি, এটা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি হচ্ছে তুমি আমাকে তার ৫%-ও ভালোবাসোনি। আর তোমাকে যে ভালোবেসেছি, তা সব কিছু জেনেই আর মেনেই বেসেছি। ধরো নাও, আমি তোমার সবই জানি, তবুও তোমাকেই ভালোবাসি। কী বলবে? কিছু বললেও নিব না। যার কাছ থেকে ভালোবাসা নিইনি, তার কাছ থেকে দুঃখ কেন নিব? না, নিব না। আচ্ছা যাও, দুঃখ দিয়ো, নিব। আঁচলপেতে নিব।


আচ্ছা, এত কথা বলছি কেন! আমি আর তোমার সাথে কথা বলব না, শুধু নিজের সাথে নিজের কথা হবে। আর তুমি আমার লেখা না পড়লেও কষ্ট পাব না। কারণ বাকি মেয়েদের চাইতে দীর্ঘদিন আমি আমি তোমার পাশে আছি ছায়ার মতো। আমি তোমার এমনই ছায়া, যাকে তুমি চাওনি, খেয়াল করোনি ভুলেও। একটা কথা বলি? অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করছে। তুমি একটা কাজ করতে পার। কখনও যদি হাতে সময় থাকে, তখন দেখতে পার আমাদের পুরনো কনভারসেশন। সেখানে দেখতে পাবে, আমি কতবার তোমাকে মনে করেছি, আর তুমি কতবার নিজ থেকে আমাকে মনে করেছ। সেখানে আরও দেখতে পারবে, আমি কতবার বলেছি ভালোবাসি আর তুমি কতবার…! কোনও দিনও ভুল করেও বলোনি ওকথা। আচ্ছা, মিথ্যে করে যদি একদিন বলেই ফেলতে, তা হলে কি খুব ক্ষতি হতো?


…থাক, লাগবে না। সেটা তুমি অন্য কাউকে বোলো। আমার কিছুই লাগবে না। এত ফালতু ফ্যামিলির মেয়েও আমি নই যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভালোবাসা চাইব। আচ্ছা, আজকে কেন এত পুরনো কথা উঠছে! এটা তো আমি চাইনি। আমি চুপ করে সরে যেতে চাই সবার কাছ থেকে। আর একটা কথা। তোমার সাথে যদি কখনও দেখা হয়, কিছু কথা হবে সামনাসামনি। এই কিছু কথা তুলে রাখলাম। আর দেখা না হলে আমি বলবও না। ভুলেও না! আচ্ছা শুনো, চলে যাচ্ছি। খুব মাথাব্যথা করছে। নিজের খেয়ালটা রেখো, কেমন? একটা ছবি দিই আজকে তোমাকে আমার? দিই না! আজ সকালে তুলেছি। শুনো, যাবার সময় একটা টাইট-হাগ নিয়েও যাচ্ছি তোমার কাছ থেকে…মনে মনে। জান, ভালোবাসি!


আশা করি, ঠিক আছ। সারারাত তোমাকে নিয়ে আজ স্বপ্ন দেখলাম। এত খারাপ লাগছে যে তা বলার বাইরে। তুমি কাঁদছিলে আর বারবার বলছিলে, কে যেন তোমাকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়েছে..আমি সত্যিই তোমার কান্না দেখে ভয় পেয়েছি। আমি কখনও দেখিনি তো সামনাসামনি বা স্বপ্নে তোমার কান্না, তাই। তবে কেউ একজন তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে, সেটা আমি শিওর! কষ্টটা পায়ই মানুষ তার কাছের মানুষ, ভালোবাসার মানুষ বা প্রিয়মানুষের কাছ থেকে। আর এই তিনটার মধ্যে একটাও আমি না। তাই আমি কষ্ট দিই নাই, এটা আমি শিওর। আরে বাবা, কান্নাকাটি কোরো না। স্বপনেও না। এনজয় করো। দুইদিনের দুনিয়া! জানি, ওটা তুমি করই প্রতিটা মুহূর্তে। ওই যে তুমি লিখেছিলে না…ওই মেয়েকে নিয়ে…যেজন আমার সবচেয়ে দূরে, সেজন আমার সবচেয়ে কাছে! আসলেই সে তোমার অনেক কাছে, বুঝাই যায় তোমার লিখা পড়ে। অনেক সৌভাগ্য তার। বলেছিলাম না তোমাকে, অনেকে ৫ বছরেও আপন হতে পারে না, অনেকে ৩ মাসেই আপন হয়ে যায়! এই মেয়েটার প্রতি অনেক টান তোমার। সে তোমায় কষ্ট দিয়ে থাকলেও তাকে ভালোবাসা দাও। যা হোক, তোমার পার্সোনাল বিষয়, তোমার ইচ্ছে।


আমি যেমন করে তোমাকে ভালোবেসেছিলাম, তেমন করে আবার কাউকে ভালোবাসলে কষ্ট অনেক। কষ্ট না হলেও বিষয়টা তো ভালো না। আমি এমন একজন মানুষকে ভালোবেসেছিলাম, যাকে আমি তার সবটা নিয়েই ভালোটা বেসেছিলাম, তার খারাপ দিক থাকলেও সেটা জেনেবুঝে সেটা নিয়েই বেসেছিলাম, কারণ তোমার কোনও জিনিসই আমার কাছে ফেলনা ছিল না। তোমার খারাপ ভালো দুই দিকই আমার প্রিয় ছিল। আমি ছিলাম তোমার সাথে সব সময়ই ছায়ার মতো। তুমি কখনওই এই ছায়াকে দেখতে বা সহ্য করতে পারোনি। ব্যাপার নাহ্‌! আর একটা জিনিস কী জানো, আমি বিবাহিত কোনও ছেলের প্রেমে পড়িনি। তোমার সংসারভাঙারও কোনও ইচ্ছে আমার নেই। আমি কিন্তু তোমাকে তোমার বিয়ের আগে থেকেই চিনি, আর তোমার সাথে পরিচয় তখন থেকেই। হুটহাট করে যে কেউ ভালোবাসতে পারে, আর এদের ভালোবাসা বেশিদিন টিকেও না, হঠাৎ চলেও যায়।


তোমার মনে আছে শুভ্রার কথা? সুবর্ণলতা রেহমান শুভ্রা। সে খুব না তোমাকে ভালোবাসতো? এর পর কী হলো? এই মেয়েই আবার শুনলাম ভালোবেসে এক ছেলেকে বিয়ে করেছে! এইটাকে কী বলে, জানো? বিয়ের জন্য ভালোবাসা! মানে যখনই দেখল, তোমার সাথে তার বিয়েটা হচ্ছে না, সাথেসাথেই আরেকজনকে ভালোবেসে বিয়ে করে ফেলল। আর আমি যে তোমার জন্য পাগল ছিলাম, সেটা নিয়ে সে অনেক হাসাহাসি করেছে। সে ইনডিরেক্টলি বলেছে, সে-ই তোমার কাছের। কোনও কিছুই আমি তাকে কখনও বলিনি। আজ খুব জানতে ইচ্ছে করে, তার সেই ভালোবাসা কই গেল...


মানুষ আসলে স্বার্থ নিয়ে ভালোবাসে। আমার মতো পাগল কমই আছে মনে হয়। আমি তোমার সেই পাগলটা, যে তোমাকে বিয়েও করতে চায়নি, তোমার ফোনের আশাও করেনি, একমাস ধরে মেসেজ আনসিন অবস্থায় পড়ে থাকলেও কিছুই বলেনি। কখনও কোনও চাওয়া বা অভিযোগ ছিল না আমার। শুধু একটা আফসোস নিয়েই চলে যাচ্ছি, সেটা হলো, তুমি কখনওই আমাকে বুঝোনি। চলে যাই…ভালোবাসায় বেঁচো!


(বহু দিন পর।) তুমি যে লেখাটা দিয়েছ না একটু আগে, আমার বাসায় যে মহিলা কাজ করেন, ওঁর গল্পের মতোই ওটা অনেকটা। তবে পার্থক্যটা কী জানো, আমার বাসায় যে মহিলা কাজ করেন, উনি মহিলামানুষ হয়েও মোটামুটি ভালোই ইনকাম করেন। ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার, বা কখনও মাসে ১৫ হাজারের উপরেও হয়। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে, ছোট মেয়ে কিছুদিন আগে এসএসসি পাস করল কমার্স থেকে, এ-মাইনাস পেল। পড়াশোনার সম্পূর্ণ খরচ এই মহিলাই চালিয়েছেন। ওঁর হাজব্যান্ড আগে ভ্যানগাড়ি চালাতেন, এখন তেমন কিছুই করেন না। অসুস্থ কি না, তা নিয়ে তিনি কাউকেই তেমন একটা কিছু বলেন না।


উনি পাগলের মতো পরিশ্রম করেন। সকালে আসেন, শহরে কাজশেষে সন্ধ্যায় বাসায় যান। বাসায় গিয়ে রান্না করে ছোট বাচ্চাদের, স্বামী সবাইকে নিয়ে খান। জামাইয়ের প্রতি, তাঁর নিজের কপালের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্রও অভিযোগ নেই। বরং আমি দেখেছি, তাঁর চোখে তাঁর জামাইয়ের প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা।


গতকাল উনি আমার কাছে চাইলেন ১০০ টাকা। আমার নিজের কাছে টাকা থাকলে তাঁকে প্রায়ই দিই। ১২০ টাকা দিয়েছি। তিনি অনেক খুশি। আমি আবার বললাম, কী করবেন এই টাকা দিয়ে? বললেন, মাছ কিনে নিয়ে যাব যাবার সময়। বাসায় গিয়ে সবাইকে রান্না করে খাওয়াব। মাথায় পরে এল, এই কটা টাকা দিয়ে কী কিনবেন আর কী খাওয়াবেন! কারও কারও খুব অল্প টাকায়ও জীবন কেটে যায়! লোকে বেশি টাকা দিয়েও চলতে পারে, আবার কম টাকা দিয়েও চলতে পারে। মানুষ বড়ই অদ্ভুত জীব, সব কিছুর সাথেই দিব্যি মানিয়ে নিতে পারে চাইলেই!


এক এক করে সব দায়িত্ব পালন করছেন তিনি, তাঁর সংসারে যে ভূমিকা---বাবারটাও মায়েরটাও, তিনিই করেছেন। কিন্তু তাঁর কিছু নিয়েই অভিযোগ নেই কোনও। তুমি যদি এদের মতো মানুষের ওখানে যাও, কখনও তাদের দেখতে যাও, তবে দেখবে এদের ঘর প্রাচুর্যে ভরপুর, আর এই প্রাচুর্য হচ্ছে ভালোবাসার প্রাচুর্য। দেখতে ভালো লাগবে। দেখবে, মানুষ কত অল্প পেয়েও কত হাসিমুখে বাঁচতে পারে। কতটা অল্প সামর্থ্যেও মানুষ অভিযোগশূন্য হয়ে ও ভালোবাসা বুকে নিয়ে বেঁচে আছে।


এই শুনো! ভালোবাসি…তোমায় ভালোবাসার পরিমাণটা বেড়ে যাচ্ছে প্রতিদিনই! এই আছ? তুমি কালকের ওই কবিতাটায় কতজনকে রেখেছ? তুমি বলেছিলে, ওটা আমাকে নিয়ে লেখা। অথচ এখানে অন্য কাউকেই দেখতে পাচ্ছি! এই জান, এই রাগীমানুষ...তুমি একটুও ভালোবাস না আমাকে!


শুভ সকাল, ভুঁড়িওয়ালা আঙ্কেল! এই, তুমি রাতেও হোয়াটসঅ্যাপে ছিলে দেখছি। মনে হচ্ছে, রাতেবিরাতেও প্রেম কর। হুম! তুমি জানো কি প্রবাদে আছে, পুরাতন চাল ভাতে বাড়ে? ঠিক তেমনি পুরাতন ভালোবাসা সবার আগে, কেন মনে থাকে না?


কেউ একজন তোমায় বলেছিল…তোমার যদি কখনও রাগ হয়, কাউকে বকা দিতে ইচ্ছে করে, বা খুব মারতেও ইচ্ছে করে…তবে তার সবই আমায় দিয়ো।…মনে পড়ে? তোমার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই, কিন্তু তোমার ঘৃণা পাওয়ার জন্য আমি আছি। কেউ একজন তোমাকে অনেক কিছুই বলেছিল…কিছুই মনে নেই তোমার।


আচ্ছা, ভুলগুলো মনে হয় বেশি হয়ে যায়…কী করা যায়, বলো তো? আল্লাহ্‌র কাছে তো মাফ চাই প্রতিদিনই। কিছু শোধরাই, কিছু পারি না। কিন্তু একটা জিনিস কী জানো, আমি আমার সব ভুলই স্বীকার করার সৎসাহস রাখি। নিজের জ্ঞাতসারে এমন কোনও ভুল আমি করি না, যা স্বীকার করা যায় না। ইদানীং নিজের দোষগুলো আরও বেশি করে চোখে পড়ছে।


তোমাকে ভালোবাসা যায়, বিশ্বাস করা যায়…কিন্তু তোমাকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা যায় না। হা হা হা!


জানো, মানুষ না অনেক ব্যক্তিগত কথা শোনাতে পছন্দ করে, যদিও তাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আমার তেমন কোনও আগ্রহ নেই। এই যে ধরো, গতকাল আম্মু মাথাঘুরে পড়ে গেছে। তার বমি, বাথরুম সব সাফকরা, তার কাপড় ধুয়ে শুকানো, কী খেতে চায়, মেডিসিনের সাইডইফেক্ট হচ্ছে কি না সব খেয়ালরাখা…কে করবে এই কাজগুলো! ভাবি তো চাকরিজীবী। ভাইয়ারও চাকরি আছে। বিয়ে করে যদি আমি চলে যাই, তা হলে আম্মুর কী হবে! এইগুলোর চিন্তায় আর সামগ্রিক অবস্থা দেখে বিয়ে করার সাহসটা আমার আর হয় না। যদি সত্যিই আমার বিয়ে করার ইচ্ছে থাকত, তা হলে কেউ আটকে রাখতে পারত না, কবেই করে ফেলতাম! কিন্তু সত্যিই ইচ্ছে নেই। অথচ মানুষের সাথে দেখা হলেই বিয়ে নিয়ে খোঁচা দিয়ে কথা বলবে। ভালো লাগে না কিছু!


তোমাকে এসব কেন বলি? কারণ তোমাকেই সব কিছু বলা যায়, তাই বলি। আমি ফেসবুকে এসব লিখে জানাই না। সবচেয়ে ভালো হয় যদি সব কিছুই ফেসবুকে শেয়ার না করি। জীবনের সব খুঁটিনাটি ফেসবুকের ওয়ালে শেয়ার করবার কিছু নেই। এটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত মত। কিছু মনে কোরো না, তোমাকে ভুল করে আপন ভেবে এত ব্যক্তিগত কথা বলে ফেলেছি। মাফ করে দিয়ো। আসলে মাথা ঠিক থাকে না তো, তাই। সরি, মাফ চাই!


আমি একটা কাজ শুরু করেছি। একসময় মাঝেমাঝে গহনা ডিজাইন করে নিজে পরতাম। বান্ধবীরা দেখে সবাই পছন্দ করত। বেশিরভাগ বান্ধবী বলেছে, এটাকে কেন আমি বিজনেস হিসেবে নিচ্ছি না? তাদের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমি এটা শুরু করে দিয়েছি। আজ ৩ মাস হবে। বিজনেস করব, কখনও ভাবিনি। আমার লজ্জা লাগে। কেন শুরু করলাম? কিন্তু এখন পিছানোর আর উপায় নেই। আর কিছু একটাতে ব্যস্তথাকাটাই ভালো, আমার মনে হয়। তোমায় কিছু ছবি পাঠিয়েছি গহনার। ওগুলির সবই আমার বানানো। আমি জানি, মানুষ এসব দেখবে আর কতজন কতকিছু বলবে পেছনে! আমি তো আর খারাপ কিছুই করছি না। ঘরে বসে নিরাপদে একটা বিজনেস করছি। তবে লাভ তেমন হয় না কিছুই। শুধু কিছু মানুষের খুশিটা পাই। এটাই আমার পরিশ্রমের পুরস্কার।


এই বুড়া, খারাপলোক…ভালোবাসে না যে মানুষটা আমাকে…সে-ই আমার ভালোবাসা, আমার পৃথিবী। অবশ্যই অন্য কেউও আসতে পারে আমার এই পৃথিবীতে, যদি তীব্রভাবে কেউ আমায় ভালোবাসে। ভালোবাসি যে তোমাকে, সেটা তুমি বুঝ না কেন, আমার বুড়ালোক? কতকাল ধরে ভালোবাসছি, তবুও বুঝ না কিছুই!


আচ্ছা, একটা হিসেব করো তো…সারাদিন আমরা মোবাইলে কতবার ঢুকি? আনুমানিক? ৭০/৮০ বার? না কি আরও কম? আচ্ছা, ৫০ বারই ধরি। দেখো, এই ৫০ বারই আমার মোবাইলের লক খুলে ঢুকতে হয়। আর আমার পাসওয়ার্ড দেওয়াই তোমার নামে। তা হলে চিন্তা করো, দিনে কতবার এসে পড় আমার লেখায়! আমার ফেসবুক পাসওয়ার্ড, মোবাইল-স্ক্রিনের পাসওয়ার্ড সব কিছুতেই তুমি। আচ্ছা, এখন হিসেব করে দেখো তো সেটা কত বছর ধরে হচ্ছে? ৩/৪ বছরের বেশি! জানো, আমি চাইলে চেঞ্জ করতে পারি অনেক কিছু। কিন্তু তুমি যেভাবে মনে থেকে যাও, সেভাবে অন্য কিছুই মনে থাকে না আমার। আমি মোবাইলের লক খোলার জন্য কোনও প্যাটার্ন দিই না। আমার মনে থাকে না কিছুই। আমার মনে শুধুই তুমিই থাকো, তাই তোমার নামেই মোবাইলের লক খোলার পাসওয়ার্ড দেওয়া আর ফেসবুকেরটাও!


এই আমার বুড়ালোক! ভালোবাসি এত্তগুলা, সেটা বুঝ না কেন? আমি মরে গেলে তুমি খুশি হও? তবে সেটাই হোক! আমি মরেই যাব। তুমি থাকো আনন্দে! শোনো, আমি তো চাই তুমি শান্তিতে থাকো। এই কারণে আমার লাইফে তুমি আসো, সেটাও আমি চাই না। যদি আমার দ্বারা তোমার কোনও ভুল হয়, সেই ভয়ে। জানো, কারও না-পাওয়ার, কষ্টের স্ট্যাটাস দেখলে খুব কষ্ট হয় আমার। আর মানুষটা যদি তুমি হও, তা হলে আরও বেশি কষ্ট হয়। তুমি কষ্টে থেকো না। তুমি কষ্টে থাকলে এই পৃথিবীর একটা বোকামেয়ে সারাক্ষণই কাঁদতে থাকে।