মায়া

 শোনো, খুব চুপি-চুপি বলছি তোমায়...
কাউকে আবার বোলো না যেন!
 
ওই দূরের ওই আকাশ থেকে--
একদিন, এক ‘তারা’ নেমেছিল!
খুউব ভোরের, ঘুমচোখটা--
খুলেই আমি আৎকে উঠি!
অভয় দিয়ে বললো ‘তারা’--
ওগো, ভয় পেয়ো না, দেখবো তোমায়!
খুশিতে আমি আটখানা হায়!
মুখে বললাম, কী চাই, বলো?
তোমায় নিয়ে ঘুরবো যে আজ--
সঙ্গ তুমি দেবে আমায়?
ইসসস্...কী যে বলো! এও কি হয়?
জানো তুমি,
রাতের পর রাতটি জেগে...
তোমায় দেখে, তোমায় ডেকে, ক্লান্ত আমি!
সত্যি বলছ? চলো তবে--দেরি কেনো?
 
ছুটেছে সময় বেজায়...
কেটেছে প্রহর হুড়মুড়,
চেনাঅচেনা রাস্তা ধরে ধরে--
অনেকটা পথ হেঁটে...ওই দূর, আরও দূর।
জানা গল্পের অজানা বাঁকে--
লুটো আর পুটি খেয়ে, ভীষণ হেসে।
শেষলেখাটা, শেষ না করেই--
আসলো, ইতি। এ কী হলো!
 
প্রিয় বইয়ের গল্পভাঁজে,
টুক্ করে এক ডুবটা দিয়ে,
ছন্দছাড়া পদ্যগুলোও,
ছন্দ ভেঙে ছন্দে পড়ে।
সারিসারি সব গাছের সাথে,
রাজ্যভরা গল্পে মেতে...
ঝরেপড়া শুকনো পাতার--
কষ্টকান্না একটু শুনে।
নেই-নাম সব ফুলগুলোকে--
অনেক করে ভালোবেসে।
ভরদুপুরে রাখাল ভাইয়ের,
বাঁশির সুরে পথ হারিয়ে...
পুকুরঘাটে, স্বচ্ছ জলে,
মুখটা নিজের দেখে।
বিলের মাঝে ছড়িয়ে-থাকা,
শাপলা তুলে-তুলে...
আকাশছোঁয়া নদীর বুকে...
ডুবসাঁতারে মেতে।
সাগরপাড়ের ঢেউয়ের সাথে,
তাল মিলিয়ে নেচে।
বৃষ্টিকেই আজ, অনেকখানি...
জল পুরিয়ে দিয়ে,
ঝর্ণাধারার ছন্দে যেয়ে, যেয়ে...
আনন্দেতে খেলে।
কাশবনের ওই সবুজ-সাদায়...
লুকোচুরিতে মেতে।
সবুজজমির ঘাসগুলোতে,
একটুখানি ছুঁয়ে...
রংবেরংয়ের প্রজাপতিদের,
পেছন-পেছন ছুটে...
দূর পাহাড়ের ওই অজানায়,
গোলকধাঁধায় পড়ে...
গানগাওয়া ওই পাখিগুলোর,
মিষ্টি সুরে ভেসে।
সন্ধেবেলার আলোআঁধারির,
মায়ার টানে ঘেঁষে।
 
এমনি করে, পুরোটা দিন--নেশায় গেল কেটে।
 
বললো ‘তারা’--
রাত নেমেছে...
হয় যে এবার যেতে!
আসি তবে...
আমার ঘরে নেমতন্ন গো--
এসো!
 
...
ভাবছি আমি...
একদিন কি, সত্যিসত্যিই--
‘তারা’র দেশে যাবো?
সেই দেশেতে, যাই-ই বা যদি, ফিরবো আবার কীসে?