মায়ের নিজের খুশি

মা, তুমি এমনই থেকো,
তুমি যেমন আছ, ঠিক তেমনই থেকো।
যদি কখনও তোমার শাড়ি ফেলে সালোয়ার-কামিজ
কিংবা প্যান্ট-শার্ট, এমনকি স্কার্টও পরতে ইচ্ছে করে,
তবে তা-ই পরো।
তবুও মা, তুমি এমনই থেকো।




মা, যদি কখনও তোমার ঘুমিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয় খুব বেলা অবধি,
অথবা কখনও যদি তোমার রাঁধতে ইচ্ছে না-ই করে,
সেদিন নাহয় আমরা বাড়ির সবাই মিলে
কিছু-না-কিছু তৈরি করে ঠিক খেয়ে নেব।
তবুও তুমি জোর করে, নিজের মনের বিরূদ্ধে গিয়ে
রান্নাটুকুন কোরো না ভুলেও।
আমরা নাহয় এক-দুটো দিন যেমন-তেমন খেয়েই নেব,
তবুও মা, তুমি যেমনটি চাও, ঠিক তেমনই থেকো।




মা, কখনও কি তোমার ইচ্ছে করে দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে?
কখনও সখনও তোমারও কি ইচ্ছে হয় হতে বাঁধনহারা শিশু হয়ে?
বিকেল কিংবা ভরদুপুরে আমরা যখন সবাই থাকি ঘরের বাইরে,
তোমারও কি ইচ্ছে করে দেখতে কেমন লাগে খানিক বাইরে যেতে?




ইচ্ছে তোমার করে ঠিকই হুট করে বেরিয়ে পড়তে!
তবে কখনও যাও না কেন?
বাবা বকবে?
কিংবা আমি? বা আমরা সকলে?
না কি সমাজের চোখ মাথায় রাখো?




আমরা কেন তোমাকে বকব, বলো?
যদি কেউ তোমাকে বারণ করে,
তবে তাকেই নাহয় আচ্ছা করে বকে দিয়ো!
মা গো, তুমি চুপ থেকো না,
ইচ্ছেগুলি অমন করে খুন কোরো না।
তুমি তোমার ইচ্ছেমতো ঘুরতে যেয়ো,
তুমি ঘরের মধ্যে কষ্ট পেলে
বলো, কার কোথায় কী এসে যায়?




মা গো, তোমার কীসে খুশি, বলো তো দেখি?
তোমার একটা খুশি বাবার মতন,
তোমার একটা খুশি আমার মতন,
তোমার একটা খুশি ভাইয়ের মতন,
কিংবা তোমার আরও হাজারো খুশি…
সবই তো দেখি এদের মতন, ওদের মতন!
এতশত খুশির ভিড়ে, তোমার কোন খুশিটা তোমার মতন?
বলো না মা গো, কোথায় লুকিয়ে গেছে তোমার খুশি?




মা গো, খানিক হলেও হয়ো তুমি এক কেবলই তোমার খুশি,
একটু হলেও থেকো তুমি ঠিক অবিকল তোমার মতন!