যন্ত্রণা প্রতিযন্ত্রণা

বিশ্বাস করো, আমি কখনওই নিজে ইচ্ছে করে মরে যেতে চাইনি।
তুমিই বলো, এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে চায় আবার কোন গাধাটা?
কিন্তু যখন থেকে তোমাকে একটু একটু করে
চোখের সামনে থেকে মরে যেতে দেখছি, প্রিয়,
বিশ্বাস করো, আমারও, বেঁচে-থাকার ইচ্ছেটা,
তখন থেকে ফুরিয়ে গেছে।


তুমি খুব আম খেতে ভালোবাসতে, আমার মনে আছে।
শুনেছি, তুমি নাকি ইদানীং দুটো ভাতই খেতে পাও না;
কারুর কাছ থেকে টাকা নেবার মানুষই তো তুমি নও,
তাই ভাবছি, স্কুলে পড়ানোটা এবার আমি ছেড়ে দেবো।
আমি টাকা চাইনে আর।
তোমাকে দু-পয়সার সাহায্য করতেই পারব না যখন,
তখন চাকরিটাও আর আমি করব না।


তুমি নাকি শ্বাসকষ্টেও ভোগো আজকাল,
এটা শুনবার পরেও আমাকে শ্বাস নিতে হবে?


তোমার আজকের এই অবস্থানের জন্য
অনেকেই নাকি তোমায় কথা শোনায়,
তাই আমি ঠিক করেছি, সংগত- কিংবা অসংগতভাবে,
আমিও কেবলই সবার কথা শুনব,
কাউকেই কিছু শোনাব না আর।


শুনেছি, কীসব উলটাপালটা কাজ করে
তোমার নাকি জেল হয়েছে,
ওখানে নাকি মারধরও করে তোমাকে!
এখন এসবও আমায় সহ্য করতে হবে?
ভালোবেসে ফেলবার মানেই কি তবে
সহ্যের সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া?


তুমি খুব জলদি ছাড়া পাও, এই প্রার্থনা করছি।
বেরোনোর পরে নাহয়
আমি হয় তোমায় খুন করব, নয়তো নিজেকে।
তোমার ওই ধুঁকে ধুঁকে বাঁচা, আর
তা দেখে আমার এই মরে মরে বাঁচাটা---
এবার শেষ হোক!