শিথানের পাশে

 
ও আমার শিথানের ময়না গো,
কত বলো আর পার করব বোকা-বোবা রাত?
কান্না জড়িয়ে গাঁথব বাধঁনে আর কত বলো ব্যথার মালা?
সয় না যে আর আহা এ কী মরণজ্বালা!


যাও এবেলা, বসে পড়ো গিয়ে,
ক্লান্তি এলে নিয়ো বিশ্রাম খানিক,
ক্ষুধা পায় যদি, খেয়ো কিছুটা,
তোমার জন্য তো তৈরি সবই!
তা হলে আর দেরিটা কীসের?


বসে পড়ো ঘটি-পাটি বিছিয়ে,
তোমার তো জানি ওটুকই সব!
মশাই, সারাক্ষণ যে ডুবছ বইয়ে,
তবে আমায় কখন মনেটা রাখো?


বলো, আমায় নাকি মনেও পড়ে!
ভালোবাসি, তাই যা-ই বলে যাও, বুঝেও হাসি!
অমন বইয়ের সাগর, ওখানে ডুবে থাকলে বলো,
সেখানে আমি আর কোথায় থাকি?
মাঝে মাঝে কী ইচ্ছে যে হয়, শুধু জানতে যদি!


এই যে এমন বইয়ের মধ্যে ডুবেই থাকো,
রাত নামলেই বাড়ে পড়ার হিড়িক,
এদিকে আমার একলামনের ইচ্ছে কেবল
কণ্ঠ তোমার একটু শুনি, তার কী হবে?
বলো, আমি যাবটা কোথায়?


এত চিঠি দিই রোজ, এত যে জ্বালাই,
বোঝো না কেন, আমিও থাকি
তোমার একটা চিঠির অপেক্ষাতে!


শুনে বলছ নাকি, আদিখ্যেতা ছাড়ো তো এবার!
আহা, থাকছি এত বইয়ের স্বর্গসুখে, আর
তুমি আছ কিনা ছাইপাঁশ ওই চিঠি নিয়েই?


হ্যাঁ, জানি তো আমি, তোমার বেলায় সবটাই ঠিক!
আর আমি করলেই দোষটা কেবল!
আচ্ছা, এই যে এত কাব্য পড়ো,
পড়ো উপন্যাসও, আমায় কেন লিখো না কিছুই?
তবে অমন পড়ে হয় কী, বলো?


কখনও আমায় ভেবে কবিতা দেবে…তোমার লেখা?
নাহয় গল্পই দিয়ো, খুব ছোট হলেও, দেবে একটা?
কিছুই আমায় দেবে না বুঝি? এত হাড়কিপটে!
দিয়ো না নাহয়! মনে করে শুধু তোমাকেই দিয়ো!
আর এই শিথানের পাশে বসে বসে পোড়ো, ওতেই হবে!