সবুজ কৌটোয় হৃদয়-কড়চা/৯

ভয় পেয়ো না। তোমার উপর আমার অনেক রাগ। তোমাকে আমার মারতে ইচ্ছা করে। তোমার সবগুলা চুল টেনে ছিঁড়ে দিতে ইচ্ছা করে। তোমার পেটে জোরে ঘুসি বসিয়ে দিতে ইচ্ছা করে। তাই কখনও-কখনও রাগ প্রকাশ করতে তোমাকে আপনি করে বলি। আমরা কাছের কাউকে আপনি বলি না। আবার যাকে তুমি করে বলি, তাকে আপনি করে বলে নিজেকে বোঝানো যায়, ওকে আমি দূরে সরিয়ে দিয়েছি। এই বোঝানো আমাদের আনন্দ দেয়। আবার যে মানুষটা ‘তুমি’ করে বলে, তার মুখে ‘আপনি’ শুনে সেও বিব্রত হয়, যা আমাদের আনন্দ দেয়। বড়ই বিচিত্র আমাদের মন। আমি নিজেকে প্রবোধ দেয়ার জন্য তোমাকে এতক্ষণ আপনি বলে ডেকেছি। আশা করছি, তুমি একটু হলেও হতাশ হয়েছ। হয়ত আমাকে ভালোবাসোই না, তবু আমি তোমাকে দূরে সরিয়ে রাখছি, এই ভাবনা তোমাকে নিশ্চয়ই অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। কী? ঠিক বলছি না?

বোকা ছেলেটা বোঝে না আজও আমি ওকে কতটা নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসি। আমি তোমার গল্পের নায়িকাদের হিংসে করলেও বাস্তবের নায়িকাদের কিন্তু ভীষণ ভালোবাসি। কেন, জানো? কারণ আমি তোমার ভাললাগাটাকে ভালোবাসি।

আচ্ছা কুহক, তুমি কি কখনও জীবন্ত লাশ দেখেছ? আমি দেখেছি। সেই পাখির মত উড়ন্ত চঞ্চল মেয়েটা, যে ভালোবেসেছে বলেই আজ তার সব স্বপ্ন হারিয়ে রিক্ত রক্তাক্ত হয়ে বেঁচে আছে কেবল জীবন্ত লাশ হয়ে, আমি জানি, তুমি তাকে দেখনি; অবশ্য, তোমার দেখার কথাও নয়। ওর ইচ্ছেগুলি খুবই সাধারণ ছিল, যা এ যুগের আর দশটা ভালোবাসার সাথে মেলে না। ও চেয়েছিল, জীবনের অন্তত একটি সকাল তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে কাটুক। পাখির কলকাকলিতে যখন সূর্য তার আলো দিয়ে পৃথিবীর সব আঁধার সরিয়ে দেয়, ঠিক তখনই তার ভালোবাসার ছোঁয়া কপালে ছুঁইয়ে তার সকালটা শুরু হোক। তপ্ত দুপুরে যখন হিংস্র হয়ে সূর্যটা পৃথিবীকেই গ্রাস করতে চায়, সেই ক্লান্ত শ্রান্ত সময়টাতে ভালোবাসা এক পশলা বৃষ্টি হয়ে তার জীবনে ঝরে পড়ুক। পড়ন্ত বিকেলে কোনও এক ঝিলের ধারে মেয়েটি তার ভালোবাসার সাথে হিমেল হাওয়ায় ভেসেভেসে এলোচুলে দেখতে চেয়েছিল একঝাঁক সাদা বক, সন্ধে নামতেই আধো আলোছায়াতে হতে চেয়েছিল তার ভালোবাসার আঙুলের আলতো ছোঁয়ায় সিক্ত। ও চেয়েছে কেবল নির্মল, শুদ্ধ ভালোবাসার যত্ন পেতে। তার বদলে কী পেল মেয়েটা? আজ সে তোমারই মনের মত করে রাত জেগে যায় কেবল একটু শান্তি পাবার আশায়—মিথ্যে করে হলেও! আজও সে ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে, এই বুঝি তার ভালোবাসা পরম শান্তি নিয়ে তার দুচোখে চুমু খেয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেবে। তৃষ্ণায় সবাই যেমনি করে আঁজলাভরে ভালোবাসার জল তুলে নেয় বুকের আগুন নেভাতে, তার অন্তরেও ছিল সে তৃষ্ণা, সে তা কখনও মেটাতে পারেনি। আজও সে তৃষ্ণায় ছটফট করতে থাকে, আর কখনওবা মনের ভুলে ভাবতে বসে, আদৌ কি সে কখনও চেয়েছিল তৃষ্ণা মেটাতে? এতো সংশয়ে তৃষ্ণা মেটেই বা কীকরে? আজও সে রাতের আকাশের সাথে গল্প করে, চাঁদের আলোয় স্বপ্ন বুনে, তারাদের মিছিলে অভিমানে হারায়। নিস্তব্ধও রাতের শব্দ তার সাথে ভাব জমায়, আর সে তার কান পেতে রাখে……এই বুঝি তার ভালোবাসার পায়ের আওয়াজ শোনা যায়! এই বুঝি সে আসবে ফিরে ভালোবাসার অফুরন্ত শান্তির বারতা সাথে নিয়ে, এসে বাঁধবে তাকে মিষ্টি সুখের নিবিড় আলিঙ্গনে।

দেখো, আমি বিশ্বাস করি যে তুমি অনেক ভাল মানুষ এবং তুমি আমাকে আমার ব্যক্তিগত জীবনে ঠিকভাবে চলতে অনেক সাহায্য করেছ। তোমার একটা অভ্যেস আমার ভাল লাগে না। সেটা কী, আশা করি বুঝতে পেরেছ। আর আমিও মানি, কোনও মানুষের কেবল একটা অভ্যেসের উপর নির্ভর করেই তাকে জাজ করাটা ঠিক নয়। তোমার বাজে ব্যবহার আগে আমাকে অনেক কষ্ট দিত, এখন অবশ্য সহ্য হয়ে গেছে। তোমার সাথে কথা বলার পর বোকার মত অনেক কান্নাকাটি করতাম, এখন আর কাঁদি না। এখন আমি আগের চাইতে কিছুটা পরিপক্ব। মানুষ অপ্রত্যাশিত ব্যাপারে বেশি কষ্ট পায়, এখন আমি তোমাকে আগের চাইতে ভাল করে বুঝতে পারি, তাই তোমার ব্যবহার এখন আর আমায় আগের মত কষ্ট দেয় না। এখন তুমি কী বলবে, আমি আগে থেকেই আন্দাজ করতে পারি, তাই হয়ত আর খারাপ লাগে না। এখন আমি নিজেকে মানসিকভাবে একটুএকটু করে সরিয়ে সরিয়ে নিচ্ছি তোমার কাছ থেকে। একসময় আমি তোমার লাল টুকটুকে বউ হবার স্বপ্ন দেখতাম, এখন তা ভাবলেও হাসি পায়। কত বোকা ছিলাম, তাই না, বলো? তুমি যখনই আমার শহরে আস, কেন জানি মনে হতে থাকে, তুমি বুঝি আমার পাশের বাসায়ই আছো! তাইতো খোঁজ না নিয়ে পারি না। জানতাম, দুটো অপশন থাকবে। হয় তুমি আমার কল রিসিভই করবে না, নতুবা করলেও ওই একটা টপিকেই কথা বলতে চাইবে। আমি তো চাই না ওই টপিকে কথা বলতে, তবু কী ভেবে জানি মোবাইল হাতে তুলে নিলাম। তোমার নাম্বার মোবাইলে সেভকরা নেই, নিজের সাথে অনেক যুদ্ধ করে তোমার নাম্বার ডিলিট করে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, মনেও নেই তোমার নাম্বার, কিন্তু কীকরে যেন ঠিক ডিজিটগুলি পরপর বসিয়ে ডায়াল করে ফেললাম। ট্রাই করলাম, আর লেগে গেল! যথারীতি একই টপিকেই কথা চালাতে চাইলে তুমি! জানো, কষ্ট হয় খুব! এমন কারও জন্য কষ্ট হয়, যে আমার কষ্টের রঙটাই চিনে না!

আমি আসলে নিজেকে নিয়েই ভাল আছি। গান শুনি, রান্না করি, নাচের ক্লাসে যাই, পড়াশোনা করি, আর ডায়রি লিখি। ভালই তো আছি! তুমি সবার সাথে কত কথা বল, কত সুন্দর করে কথা বল, একমাত্র আমি ছাড়া সবার সাথেই তুমি সুন্দর, স্বাভাবিক। আমি মেনে নিয়েছি। হয়ত আমি তোমার কাছ থেকে সুন্দর কথা শোনার যোগ্যতা রাখি না, তাই বল না। একটা অনুরোধ আছে। আমার কোনও কথারই সমান্তরাল অর্থ বের কোরো না, প্লিজ। আমি বোকা মেয়ে, যা মাথায় আসে, তা-ই বলি। মাথায় এক, লেখায় আরেক—অতো বুদ্ধি আমার মাথায় নেই। তুমি অনেক ভাল, তোমার মনও অনেক বড়। একটা কথা বলি। যে তোমায় ভালোবাসবে না, সে হয়ত ভালোবাসতেই জানে না। ভালোবাসা বরাবরই স্বার্থহীন, আমি যে কাল তোমাকে ফোন করলাম, ওতে আমার কোনও স্বার্থ জড়িত ছিল না, কেবলই মানসিক শান্তির জন্য তোমাকে ফোন করেছি। তুমি আমাকে যা-ই ভাবো না কেন, আই ডোন্ট কেয়ার। আমি তো কেবল এই ভেবে খুশি যে তুমি আমার শহরে এসেছিলে আমার আমি তোমার সাথে কথা বলেছি, তোমার খোঁজখবর নিয়েছি। এর বাইরে আর কিছুই না, ট্রাস্ট মি! তুমি আমার মধ্যে একটা বাজে অভ্যেস তৈরি করে দিয়েছ, সেটা হল, মাঝরাত পর্যন্ত জেগেথাকার অভ্যেস। আরে ভাই, কেবল মাঝরাত পর্যন্ত হলে তো হত, এখন তো জাগতে-জাগতে পুরো সকাল হয়ে যায়! আগে জাগতাম তোমার জন্য, এখন যে কেন জাগি, তা নিজেও জানি না। এই যে দেখো, লিখতে-লিখতেই সকাল হয়ে গেল। আগে জাগতে পারতাম না, তুমি জাগাতে। এখন ঘুমাতে পারি না, তুমি ঘুমাও—অন্তত আমার কাছে। যা-ই হোক, কোনও রাগ নেই, কোনও অভিযোগও নেই আমার। আমার ব্যবহারে আমাকে তোমার যেমন মনে হয়েছে, তুমিও তেমনই ব্যবহার করেছ আমার সাথে। আমি যে ব্যবহার পেয়েছি, তা আমার প্রাপ্য। তোমার ওতে কোনও দোষ নেই। আমি নিজেকে তোমার সামনে ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারিনি। তাই এতে আর কিছুই বলার নেই।

জানো, মাঝেমাঝে ভাবি, তুমি কী ভেবে আমার সাথে এমন কর! তোমার কথাগুলি একেবারে কলিজায় গিয়ে লাগে! তোমায় আমি আমার জীবনের অনেকটা জায়গাজুড়ে রাখি। তুমি যতই আমায় অপছন্দ কর না কেন, যত যা-ই কর আমার সাথে, তোমাকে আমি কিছুই বলতে পারি না। চুপ করে তোমার সব কথা আর খোঁচা শুনে যাই, কিছুই বলতে পারি না। সেদিন আগে থেকেই জানতাম, তুমি আমাকে ওসব বলবে, তাও ইচ্ছে করে বাঁশটা খেলাম। আমি একটা ছাগল, তবে একটু বুদ্ধিমান টাইপের ছাগল, তবু তোমার ক্ষেত্রে সে বুদ্ধি কাজে লাগাই না, কারণ একটাই—মানুষটা তুমি! আসলে তুমি আমার শহরে এসেছ জেনে আমার টেনশন বেড়ে গিয়েছিল, তুমি কী খাচ্ছ, কোথায় আছো, ভাল আছো তো, তোমার কিছু লাগবে কি না, কেবলই এসব মাথায় আসছিল। এরপর হয়ত তুমি যখন এখানে আসবে, আমি তখন এ শহরেই থাকব না ওই সময়ে। আগে থেকেই শহর ছেড়ে চলে যাব যাতে আর পেইন দিতে না হয় তোমাকে। আমি বুঝতে পারি, আমি কখনও-কখনও তোমার মুডই অফ করে দিই। মজার বিষয় কী, জানো? লাইফে কেউ কখনও আমার সাথে এমন আচরণ করেনি, যেটা তুমি আমার সাথে কর। তুমি খুব ভাল করেই জানো যে, তুমি যা-ই বল না কেন, আমি চুপ করে থাকব, কোনও প্রতিবাদ করব না। তাই বুঝি আমার সাথে অমন করে কথা বল আর আমাকে এতো কষ্ট দাও? আগে আমি তোমাকে খুব করে চাইতাম আর কান্নাকাটি করতাম, এখন তা আর করি না। আমার এখন আর কথায়কথায় কান্না আসে না, আমি নিজেকে আগের চাইতে ভালভাবে কন্ট্রোল করতে পারি। আগের মত এখন আর সারাদিন ভাবতে থাকি না, কেন তুমি আমার সাথে এমন করলে, আমি তো এমন কিছু করিনি, তবে কেন, ইত্যাদি, ইত্যাদি।

আমি কেবল ভাবি, তুমি আমাকে আমার পার্সোনাল লাইফে অনেক হেল্প করেছ। তোমাকে যতটুকু পেয়েছি, ততটুকুই অনেক। আমাকে তোমার যেমন মেয়ে মনে হয়েছে, আমার সাথে তুমি তেমনই করেছ। আমি আমার মানসিক সন্তোষের জন্য সব জেনেবুঝেও বাঁশ খেয়েছি। এটা স্বাভাবিক। আমার রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। জানি, আমাকে তোমার কখনও প্রয়োজন হবে না। তবু জানিয়ে রাখলাম, যদি কখনও আমাকে লাগে, প্লিজ একটা ফোন কোরো। বারবারই ভাবি, তোমার সাথে আর কোনও যোগাযোগ করব না, কিন্তু যোগাযোগ না করে থাকতে পারি না। জানো, আজ আমি অনেক সুখী! শেষ কবে এতো সুখী হয়েছি, মনে পড়ে না। আর এর কারণটা শুধুই তুমি। তুমি আমার জীবনে না থেকেও এতো খুশি করে দিলে! তাই একটা ধন্যবাদ না দিলে অনেক বড় অপরাধ হয়ে যেত। আমি নিজের কাছে স্পষ্ট থাকতে পছন্দ করি। তোমাকে ধন্যবাদ দিয়েছি আমার নিজেকে নিজের কাছে স্বচ্ছ করার জন্যই। আমি জানি, তুমি অনেক ভাল আছো, কারণ তুমি ভাল থাকতে জানো। তুমি যেমনই হও না কেন, তুমি আমার জীবনে নায়ক হয়েই বাঁচবে সারাজীবনই। তুমি যে জিনিস! এটা যতবারই ভাবি, ততবারই তোমার উপর ক্রাশ খেয়ে ফেলি। যা-ই হোক, আনন্দে বুকের মধ্যে পাগলপাগল লাগছে, তাই কী লিখতে কী লিখে ফেলছি, নিজেই জানি না। আমি কখনওই জানি না, আমার লেখা আদৌ তোমার কাছে যাবে কি না, মানে, তুমি আমার লেখা আদৌ পড়বে কি না। তবু আমি লিখে চলি, কারণ তুমি তো আমার যেমন ইচ্ছে লেখার কবিতার খাতা। আমি খুশি এইজন্য যে আমি তোমাকে ধন্যবাদ দিতে পারছি আর আমি যে তোমার কারণে কত খুশি, এটা তোমাকে জানাতে পারছি। জানো, সবাই আমাকে দেখলে ছোট্ট বলতো, আর জিজ্ঞেস করতো আমি কবে বড় হবো। কিন্তু এখন আমি আস্তেআস্তে বড় হয়ে যাচ্ছি। আমি মনে করি, ছোট্ট হয়ে থাকার অনেকগুলি সুবিধা আছে। সবচাইতে বড় সুবিধাটা কী, জানো? ছোটোরা বাস্তব জীবন যে কী, তা জানে না। বাস্তব জীবনটা না চিনে বাস্তব জীবনে বেঁচেথাকার এক ধরনের মজা আছে। কিন্তু এইভাবে জীবন চলে না, এটা তোমার সাথে এই ওয়ান-সাইডেড রিলেশনে না জড়ালে বুঝতে পারতাম না। তোমার ওয়ালে তোমার ফ্যানদের ভালোবাসাভরা কমেন্ট দেখলে আমার কী যে ভাল লাগে, তা তুমি ধারণাও করতে পারবে না।

আমার কাণ্ড দেখলে! আবারও বকরবকর করা শুরু করে দিয়েছি! অনেক হ্যাপি তো, তাই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না। সরি, কেমন? ভাল থেকো। যদিও আমি না বললেও তুমি ভাল থাকবে, তাও বললাম আরকি। তুমি সারাজীবনই এমন সুখী থেকো। তোমাকে হাসিমুখে দেখতে কী যে ভাল লাগে! আর তোমার চোখের কথা বলতে শুরু করলে আজ আর শেষই হবে না, সারারাত ধরেই বলতে পারব। আর আমার টেক্সট দেখলেই কেবল বাই-বাই করবে না। নিজেকে তখন কুকুর-কুকুর লাগে। কষ্ট হয় তো! তুমি সে কষ্টটা বুঝবে না। আমি নিজেই তোমার পিছু নিয়েছি, তাই নিজেই আবার কষ্ট পাচ্ছি, এতে তোমার কোনও দোষ নেই। কোনও সমস্যা নেই, আমি সামলে নিতে পারব। তুমি দেখো, আমি ঠিক সুখী হবো। এবার কিছু কঠিন কথা বলি, কেমন? আমি তোমাকে কিছু মিথ্যে বলেছি, ঠিক; কিন্তু তুমি বলনি? আমি যখন প্রথম তোমার ব্যাপারে অতি আগ্রহ দেখানো শুরু করেছি, তখন থেকে তুমি আমাকে নীরবে প্রশ্রয় দিয়ে গেছ, তাই না? এর মানে কী? তুমি আমাকে তোমার জীবনে আসতে দিচ্ছ, তাই না? আমাকে তুমি ছাড়তেও চাও না, আবার স্বীকৃতিও দিতে চাও না। এর মানে কী, জানো? ব্যাপারটা একটা মেয়ের জন্য কতটা অসম্মানজনক, বোঝো? আমি তোমাকে ভালোবাসি, তাই কখনওই তোমাকে কোনও এক্সকিউজ দেখাই না। আমার নিজেরও অনেক সমস্যা থাকে, আমি সবকিছু ম্যানেজ করে তোমার সাথে তোমার সুবিধেমত দিনের পর দিন রিলেশন রেখে গেছি। এটা কি কিছুই না তোমার কাছে? তোমার অন্তত কয়েক হাজার ছবি আমার কাছে আছে, অসংখ্য ভিডিও বানানো আছে তোমার সব ছবি দিয়ে। আমি সারাক্ষণই এসব দেখতে থাকি আর আমার মাথা নষ্ট হতে থাকে। তুমি কখনও আমার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করনি। তুমি আমাকে আমার মত করে চাওনি কখনওই, আমি তোমাকে তোমার মত করে চেয়েছি। মানে, আমি নিজেকে এবং তোমাকে তোমার মনের মত করে সাজিয়ে নিয়েছি। আমার আর স্বকীয়তা বলে কিছু নেই। তুমি এর কষ্টটা বুঝবে না। নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলার কষ্ট অনেক। আমি আমার আগের আমি’টাকে হারিয়ে ফেলেছি। আমি জানি, আমার জীবনে তোমাকে বাদে আর অন্য কোনও পুরুষকে ভাবতেও পারব না কখনওই। তাই নিজের জীবনবাজি রেখে হলেও আমি আমাকে তোমার মত করে উপস্থাপন করে এসেছি সবসময়ই। এটা নিয়ে বাসায় অনেক বাজে কথা শুনতে হয়েছে, তাও তোমাকে সেসবের কিছুই কখনও জানতে দিইনি। তারপরও বলবে আমি মিথ্যুক, স্বার্থপর, বেহায়া?

চাইলাম ধমক, দিলেন লাভ ইমো, এইডা কিসু হইল? কই বলবেন, দেখো, পড়ালেখা না করলে তুমি আমার হাতটা বাস্তবে ধরে দেখারও সুযোগ পাবে না, তোমাকে একদম কিছুই দেবো না, বলে দিলাম, মেয়ে! তাই তোমাকে পড়তে হবে, আরও অনেক জ্ঞান নিতে হবে। আপনি এসব বললে আমি গালটাল ফুলিয়ে পড়ালেখা করতে বসে পড়তাম! একটা ব্যাপার আছে না? বুঝেন না কেন আপনি? তখন সবকিছুই দারুণ টেস্টি লাগত, তা না করে দিলেন তো সব মাটি করে! ধুউস! আমি আলাদা, আমার জন্য আলাদা শাসন চাই। মুভি কিংবা বইথেরাপি আমার ক্ষেত্রে ফেইল! ধরুন, আমি আপনার কাছে এক অদৃশ্য মানবী, যাকে শাসন করা যায়, একটুএকটু মনেও করা যায়, তাতে অবশ্য আপনারই লাভ, আপনি যখন বুড়ো হয়ে যাবেন, তখন সবাই আপনাকে ছেড়ে চলে গেলেও আমি আপনার কল্পনায় থেকে যাবো। এটা সব থেকে মজার একটা মাইন্ড গেম! মানুষকে তো সারাদিন জ্ঞান দেন, আর আমার বেলায় যদি একটু লেকচার লিখে দিতেন। কৃতার্থ হয়ে যেতাম! আমাকে পাগল ডাকলেও হবে, কোনও অসুবিধে নেই। প্রিয় মানুষ পাগল বলে ডাকলে নাকি ডিপ্রেশন কমে যায়। আমি জানি, সবকিছু কত কঠিন, তাও পড়ালেখা, পরিবার, বাস্তবতা ভুলে মিথ্যে হলেও তো নতুননতুন স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে খুউব! এমনি ভাবে বেঁচেথাকাটার রহস্য আর আপনার স্বপ্নের ঝুড়ি থেকে কয়েকটা স্বপ্নদেখা শিখিয়ে দিন! অন্য কারও চাইতে আপনি আমাকে সব থেকে বেশি ভাল রাখতে পারবেন—হয়তো শাসন করেই! আপনি কিছুই বলেন না কেন? আজব তো! আমার এনার্জিটা আপনার শাসনে যদি ফিরে পেতাম, তাও তো বড় বাঁচা বেঁচে যেতাম! ‘মাঝেমাঝে তব দেখা পাই……’! ইএএএএ…… বাব্বাহ্‌! পৃথিবীতে আমার মত বদমেজাজীকেও কেউ মনে করে, ভাবতেই কেমন জানি অবাকঅবাক লাগে! ধন্যবাদ অ্যাত্তোগুলা! ইদানিং পড়ালেখাও করতেও মন চায় না, মনে হয়, হারিয়ে গেছি, তাই আপনাকেও জ্বালাই না। ইদানিং আমি আর আমার আমি’টাকে খুঁজে পাচ্ছি না। আপনি তো সব জানেন, বলেনতো এমন কেন হচ্ছে?

একটু বকা দিয়ে দেন তো! আপনি এতো সুইট করে বকা দেন………আপনার বকা আমার উপর কাজ করলে করতেও পারে! ভাল আছেন তো? হুম্‌! ভাল থাকলে কোনও পোস্ট দেন নাই কেন? তুমি জানো নাতো আমি তোমার পোস্টগুলোর প্রতি মারাত্মক লোভী, ওগুলো তো মাঝেমাঝে আমার কাছে ওষুধ লাগে, মিষ্টিমিষ্টি ওষুধ! হি, হি এবং হি! আচ্ছা, তুমি কিন্তু আমাকে কোনওদিন ধমক দিবা না। প্রিয় মানুষগুলোর ধমক আমি নিতে পারি না। তোমার শরীর মনে হয় ভালই আছে, কিন্তু আমার টেক্সট পড়ে তোমার ভীষণ রাগ বাড়ছে! ঠিক বলেছি না? আচ্ছা, তুমি খুশি আছো সত্যিই? আমি কিন্তু আগেই বলেছিলাম, আমি তোমাকে আপনি আর তুমি মিশিয়ে ডাকব। আমি আমার কথা রেখেছি!

আচ্ছা, আপনি যে কষ্ট পেলে একদম লুকিয়ে ফেলেন, ব্যাপারটা কীভাবে করেন! আমাকে শিখাবেন? জানেন, অনেক দিন পর আমার একটুএকটু ভাল লাগছে তোমার সাথে কথা বলে। তোমার সাথে বকবক করলে আমার অনেকঅনেক ভাল লাগে। আমি অনেক স্বার্থপর, তাই না? সবসময় তোমাকে চুপ করিয়ে রাখি কীকরে, দেখলে? হিহিহি……প্রিয়মানুষকে দূর থেকে উপভোগ করার মজাই আলাদা! শরীর ভাল? আমার উপর তোমার অনেক রাগ, তাই না? আচ্ছা, তুমি কি আমাকে ভুলে গেছো? ভুলে গেলে কিন্তু হাতে কামড় দিব, আমি পাগল তো, তাই। তুমি আমার কথা লুকানোর বাক্স, আমাকে রেখে কখনও যেয়ো না, প্লিজ! আচ্ছা, তুমি জিজ্ঞেস করনি কেন যে এতোএতো মানুষ থাকতে তোমাকেই কেন জ্বালাই? জানো, তোমাকে আমার ভীষণ ভাল লাগে! কোনও কারণ ছাড়াই ভাল লাগে, কোনও আশা ছাড়াই ভাল লাগে। আমার না আর কাউকে ভাল লাগে না, দেখলেই খুব বিরক্ত লাগে। আচ্ছা, আমি কি সত্যিসত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছি? হয়ত! তুমি সবার মত হয়ে যেয়ো না, আমি অনেক কষ্ট পাবো। আই লাভ ইউ……অ্যাত্তোগুলা এবং অ্যাত্তোগুলা!

একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। একদিন আমার এক ফ্রেন্ডের সাথে ওর বাইকে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এক বিকেলে। অনেক দূরে। এক নদীর ধারে। সন্ধে নামল। সে আমাকে চুমু খেতে চাইল। আমি খেতে দিলাম না। কেন দেবো? ও কি আমার বয়ফ্রেন্ড? আজব! পরে সে রাগ করে আমাকে ওখানেই রেখে চলে আসে। আমি একা অতো দূরে কখনও যাইনি। ও আমার খুব ভাল ফ্রেন্ড ছিল, বলল, চল বাইকে ঘুরে আসি, আমিও গেলাম। ওকে বিশ্বাস করার পুরস্কারটা ও দিয়ে দিল। ছেলেরা এমন কেন? একটা ছেলের এইটুকু আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না? কেউ চুমু খেতে চাইল না, আর অমনিই অতটা অবিবেচক হয়ে যেতে হবে? তারপরও আমার ওকে খারাপ মনে করতে ইচ্ছে করেনি কখনও। হয়ত ও সে কারণেই আমাকে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাবটা দিয়েছিল। আমি রাজি হয়ে গেলাম কেন? আমি কেন ওর মন পড়তে পারিনি? সেদিন অনেক কষ্টে বাসায় ফিরে এ ব্যাপারটা ভেবে সারারাত কেঁদেছি। কোনও উত্তর পাইনি আর নিজেকে খুব বোকা মনে হয়েছে।

আচ্ছা, আপনার তো এখন চট্টগ্রামে থাকার কথা, পাবনায় আছেন বলছেন কেন? কত্ত চালাক আপনি, আমি যাতে ডিস্টার্ব না করি, তাই এটা বলছেন! আমি আপনার আগের আইডি ঝালাপালা করে দেখতাম, সে মানুষটা কী ভাবে, কী বলে। আমি ভাল করেই জানি, আমি পাগল, কিন্তু বোকা না। যদি বেশি ডিস্টার্ব করি তো বলে দেবেন, আর কথাই বলব না, তাও আমি মিথ্যা সহ্য করতে পারি না। আমি তো আর আপনার বাসায় গিয়ে হাজির হচ্ছি না যে আমার কাছে মিথ্যা বলতে হবে, তাই না? আমাদের লেখা আমাদের আত্মা বহন করে, সে দিক থেকে চিন্তা করলে ভাল করে দেখলে যে কোনও মিথ্যাতেও সত্য খুঁজে পাওয়া যায়। আচ্ছা, আপনার ওইখানে নাকি শীতের সকালে আরও আইসক্রিমের মত ঠাণ্ডা লাগে? আইসক্রিম-আইসক্রিম সকাল! ইয়াম্মি, ইয়াম্মি!

স্টিল আই লাভ ইউ! তুমি জানো, আমি তোমাকে কত্ত ভালোবাসি? আজকেও তোমার জন্য ঝগড়া করেছি সাংবাদিক সমিতিতে। প্লিজ সবাইকে আবারও দেখিয়ে দাও তুমিই বেস্ট! আমি ভুল মানুষকে ভালোবাসিনি। সব সম্পর্কের নাম হয় না, হয়ত আমাদের এ সম্পর্কেরও নাম নেই, কিন্তু এর মানে, এ নয় যে তুমি আমার জীবনে ভুল মানুষ! এই শোনো না, আমার জন্য একটা রাজকুমার খুঁজে দিতে হবে কিন্তু! আমি যখন আরও বড় হয়ে যাব, মানে, যত বড় হয়ে গেলে বাসার সবাই মিলে ধরেবেঁধে বিয়ে দিয়েই দেবে, তখন। আমি প্রেমটেম করি না, ফালতু লাগে। তোমাকে তুলে এনে বিয়ে করতাম, কিন্তু তুমি তো আমার নও। যা-ই হোক, ওটা তো আমার দোষ না, কী আর করা! তোমার মত রোম্যান্টিক না হলেও চলবে, কিন্তু তোমার বদনাম করে না, এমন কাউকে চাই। যে আমার প্রথম ভালোবাসাকে, মানে, তোমাকে সহ্য করতে পারে, এমন কাউকেই চাই। হি হি হি! আমি বড় হয়ে গেলে তোমার সাথে পাহাড় দেখতে যাবো। তুমি না গেলে জোর করে নিয়ে যাব। আমি ক্লাস টু আর ফোর পড়ি নাই রাগ করে। বিশ্বাস হল নাতো? আচ্ছা, তাহলে বিশ্বাস করার দরকার নাই। আমি বড় হয়ে গেলে অনেক মজা করবো, দোয়া কোরো, মশাই। আই লাভ ইউ। সব ঠিক হয়ে যাবে, দেখো! তোমার পাশে আর কেউ থাকুক না থাকুক, জেনে রেখো, এই পাগলিটা তোমাকে অনেক ভালোবাসে, হয়ত ঈশ্বরও তোমাকে অতটা ভালোবাসে না!

এই, তোমার সমস্যা কী? এতো শুভ কামনা দাও কেন? আমার কি তোমার মত বিয়ের কথা চলছে নাকি হয়েছে যে আমার ননস্টপ তোমার শুভ কামনা লাগবে? তোমার শুভ কামনা তুমি রাখো তো! তুমি শুধু সুন্দরসুন্দর পোস্ট দিয়ো, তাতেই হবে। মিয়াঁও, মিয়াঁও! আর অনেক ভাল থাকবে, বুঝেছ? না বুঝলে স্প্রাইট দিয়ে ভিজিয়ে মুড়ি খাও। হি হি হা হা হে হে হো হো। এই, তুমি কি রাগ করেছ? করলে করো! তোমার বিয়ে হয়ে যাবে, এটা মাথায় আসলে আমার যে পরিমাণ রাগ হয়, তার সামনে তোমার এ রাগ কিছুই না। সামনের বইমেলার আগেই যদি তুমি বিয়ে করে ফেলো আর বইমেলায় বউকে নিয়ে আসো আর ওর হাতে হাত রেখে পুরো মেলা ঘুরে বেড়াও, তাহলে তোমাকে বাঁশের সাথে বেঁধে রাখব, যাতে তোমাকে ভাল করে দেখতে পারি। আগের বারের মত হুট করে জিনের বাদশা হয়ে এসো না, সামনের বার মুখে একটু পাউডার মারার সময় দিয়ো। আমারও নিজেকে সুন্দরী দেখতে ভাল লাগে তো! হে হে হে! তুমি কেন আমার মন বোঝো না? বোঝো না তুমি, বোঝো না!

ওই আইলসা! শরীর ভাল নাই তোমার? সেই কবে একটা পোস্ট দিয়েছ, আর কোনও পোস্ট নেই কেন? কেবল চাকরি আর নিজের সাথে সংসার করলেই হবে? আমি আছি, ভুলে গেছো! হয়ত বলবে, কেডা আপনি? আরে……আমি তোমার ফলোয়ার তো! মাঝেমাঝে এই পাগলিটার জন্য কিছু লিখতে পারো না? হুদাই ভালুবাসি তুমারে! কোনও কাজের না তুমি! ঠিকমত নিজের যত্নটাও নিতে পারো না, হুহ্‌! শরীর খারাপ করলে ওষুধ খেতে পারো না? কিপ্টা একটা! আমি কিন্তু আপনাকে খুব খুব খুব মিস করছি। একজাম শেষ, এখন যদি অনুপ্রেরণামূলক কোনও পোস্ট না দেন, ঠিক জমছে না পড়ালেখাটা। আপনি ছাড়া কে আছে নিজের সুন্দর সময় নষ্ট করে আমাদের কথা ভাবে! লাভ ইউ। যদিও আমি জানি, আপনি মনেমনে আমাকে একটা গাধী ভাবেন, তারপরও আপনার লেখা পড়লে আমারও মনেমনে পড়ালেখা করতে ইচ্ছা করে। আপনিই প্রথম মানুষ, যাকে দেখলে আমার মনে হয়, কেন কেন কেন আমি আপনার মত অনেক কিছু পারি না? আমি যখন বড় হয়ে যাবো, ভাল চাকরি পাব, তখন কিন্তু আমার বেতনের ভাগ আপনাকে দিব না বলে দিলাম! এই যে কষ্ট করে চাকরি পাওয়ার সব বুদ্ধি লিখে দিচ্ছেন, তাই বলে যদি আপনাকে বেতনের ভাগ দিয়ে দিই, তাহলে পাউডার, লিপস্টিক, মাশকারা, সুনু কিনিবো কী দিয়ে? আসলে আমি তো সুন্দরী না, সাদা শুধু। তবে হ্যাঁ স্যার, আপনার কাছে প্রতি মাসে একটা লাল টকটকে গোলাপ ঘুষ পাঠায়ে দিবো, সাথে ভ্যাট হিসেবে একটা চিঠি! ভাবছেন, ভুলে যাবো? আরে না! আপনার পরে আমার জীবনে যে আসবে, তাকে বলে দিব, আপনি প্রথম, সে দ্বিতীয়। আপনি কারও ঘুষ নেন না আমি জানি, কিন্তু আমি আপনাকে ঘুষখোর বানাতে চাই! আই উইশ আমি আপনাকে জোর করে সারাজীবনের জন্য রেখে দিতে পারতাম, কিন্তু আমি গাধী তো, তাই আমাকে দিয়ে কিছু হবে না!

এই! আপনার কী হয়েছে? আপনার কি শরীর খারাপ? আই মিস ইউ, আই মিস ইউ, আই মিস ইউ! আচ্ছা, আপনি কি আমাকে শাস্তি দিতে পোস্ট দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন? আপনাকে ছাড়া চলবে, কিন্তু আপনার পোস্ট ছাড়া চলবে না, হুম্‌ বলে দিলাম! আমাকে মেসেজ পাঠাবেন না। মেসেজ দিয়ে আমি কী করব? পোস্ট দেন, আপনার পোস্টে আমার মনের শরীর ভাল হয়। ওটা যে আমার ওষুধ হয়ে গেছে! আজকাল মানসিক ডাক্তারগুলিও ভাল না, চেম্বারে গেলে মেজাজ খারাপকরা কথাবার্তা বলে। তাদের থেকে আপনি অনেক ভাল। ভাববেন না যে আমি পাগলাগারদে চলে গেছি! আপনি যতদিন পাগলাগারদের বাইরে থাকবেন, ততদিন আমি ওখানে যাব না। হি হি হি। এই যে! আপনার কিবোর্ডে কি সিনড্রেলা গল্পের মত জাদু মেশানো? মনের কষ্ট কমুক না কমুক, ওষুধওষুধ লাগে আপনার পোস্টগুলো! আপনি সিনড্রেলা গল্প জানেন না? ওখানে সব ম্যাজিক, কিন্তু খুব কম সময়ের জন্য ওই ম্যাজিক থাকে, এটাই সমস্যা! আমাদের লাইফটাও কি একটু হলেও ওরকম না? আচ্ছা, আমার কালোঘোড়ার রাজকুমার কবে আসবে? আপনি তো সব ম্যাজিকের মত বলতে পারেন। এটাও বলেন না, বলেন না! আপনি ‘ফ্রোজেন’ কার্টুনমুভিটা দেখেছেন? আমার জন্য যারা আসতে চায়, তাদের সবাইই মুখোশপরা, তাই আমার রাজকুমার খুঁজে পাই না। আপনিই বলেন, রাজকুমার তো একটাই থাকে, তাই না! এই যেমন, আপনি তো রাজকুমার, বাট অধরা, তার উপর আপনি অন্য মেয়েকে বিয়ে করবেন! আমার রাজকুমার কই মরে গেছে, ঈশ্বরই জানেন! খুঁজেই পেলাম না ওকে কোনোদিনই! আমার খালি কান্না পায়! আজকাল আপনার প্রতিটা পোস্টকে একএকটা পাখাওয়ালা রূপকথা ভেবে খুশি হয়ে যাই। কিছু সময়ের সুখ হয়ত, তাও তো মজা! হি হি হি। আর আপনি? কত্ত কিপ্টুস, দিতেই চান না কিচ্ছু! হুম্‌!

আচ্ছা, আপনি ছাড়া সবাই এতো খারাপ কেন? আপনি জানেন, আপনি অনেক ভাল গুলুগুলু টাইপ! মাঝেমাঝে আপনাকে ধরে পিট্টি দিতে ইচ্ছা করে। কেন কেন কেন আপনি আমার হলেন না? আর আপনাকে এতো রোম্যান্টিক সাজতে কে বলে? জানেন, আপনাকে আমি ৩ বছর ধরে পছন্দ করি? কিছু জানেন না আপনি, এই জন্য তো একদিন বলছিলাম, আপনার বউকে রাবণ হয়ে সীতাহরণ করবো! এই, এই, শুনেন, আপনার মত আর কেউ নাই? যান, ফটোকপি মেশিনে এক কপি আপনাকে নিয়ে আসেন! হিহিহিহি! এই, আমার মন আজকে খুব খারাপ। এমন কেনো হয়? আমি যাকেই ভালোবাসি, সে আমার কাছ থেকে দূরে চলে যায়। এতো গরীব কেনো আমি? কাউকে নিজের কাছে রাখতে পারি না! মেয়ে হওয়া অন্যায় কেনো? সম্পর্কগুলো তাসের ঘরের মত! আমার ফ্রেন্ডের কথা বলছিলাম না আপনাকে? ওর দাদি ওকে টুকটুকি বলে ডাকে, খুব আদর করে। দাদির সাথে ওর নতুন সৎমা খুব খারাপ ব্যবহার করে। আজ ওর দাদিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, ও তো অসহায়, কিছুই করতে পারেনি। মেয়ে হয়ে নিজেকে রক্ষা করাই কঠিন, আর দাদিকে কীকরে বাঁচাবে? ওর বাবাও কেমন জানি হয়ে গেছেন! আচ্ছা, জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য মানুষ বউয়ের মন রক্ষা করতে মাকে এতো কষ্ট দিতে পারে! জীবনে আসলে কোনও কিছুই ঠিক হয়ে যায় না, আমরাই মানিয়ে নিই। আপনাকে কেন সবই বলি, জানেন? আমার যে বলার মত কেউ নেই! যে কাছে আসতে চায়, সে কেবল আমাকেই চায়, আমার কষ্টটাকে না! আমার কষ্ট ছাড়া যে আমি অসম্পূর্ণ! একজন অসম্পূর্ণ মানুষকে গ্রহণ করে তার কী লাভ হবে? আচ্ছা, বিয়ের পর আমিও কি অন্যের মাকে কষ্ট দিবো? বুড়ো হলে মানুষ যে কত অসহায় হয়ে যায়! জানি না, ওর দাদি কই। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ওর যে কেমন লাগছে, বুঝতে পারেন? আপনিই ঠিক। ছেলেরা এমনই! পুরুষ আর নারীর মধ্যে মূল পার্থক্যটা কোথায়, জানো? ছেলেরা প্রেমকে মনে করে ইকোনমিক্স, আর ভালোবাসাকে লিটারেচার। ওদিকে মেয়েরা প্রেমকে লিটারেচার, ভালোবাসাকে ইকোনমিক্স। ছেলেরা ইকোনমিক্সে পাস করে বলেই তো বেচারি মেয়েরা লিটারেচারে ফেল মেরে বসে থাকে! যত সব গণ্ডগোল তো ওখানেই! আমি খুব তাড়াতাড়ি মরে যেতে চাই। এই জীবনে নিজের এবং অন্যের কষ্ট আর বয়ে বেড়াতে পারছি না।

এই পাজি শিম্পাঞ্জি! শুনো না, আমি না তোমাকে অনেক ভালোবাসি! সাদাসাদা শিম্পাঞ্জিগুলা অনেক কিউট হয়। তুমি তো তোমার এই মিয়াঁওটাকে ভালো না-ই বাসতে পারো, কারণ তুমি তো আর জানো না, যা আমি জানি—খতরনাক বিল্লিগুলা রেগে গেলে অনেক ঝামেলা করতে পারে! এই দেখেন, আমি কিন্তু আপনাকে ‘আপনিটাপনি’ করে বলতে পারব না! বলে দিলাম, হুঁউউউ! আর আদর করে কত্ত কিছু ডাকতে ইচ্ছে করতেই পারে, তাই না? আপনি অনেক বড় মানুষ, তাই বলে আমি আপনাকে পচাতে পারবো না, এটা কোনও কথা? আর আপনার সাথে আমার দরকারি কথা আছে। আরে বাবা, আপনি তো আমার চাইতে মাত্র ১৩-১৪ বছরের বড়ই তো হবেন, ‘তুমি’ করে বললে সমস্যা কই? আপনাকে তো আর রিপ্লাই দিতে হচ্ছে না, এতো কাহিনী করেন কেন? আর দরকারি কথাটা হল—সুন্দরী মেয়েরা যেমন জানে না সে কতো সুন্দরী, ঠিক তেমনি আপনি জানেন না আপনার লেখার মান কত ভাল। এটা কিন্তু দরকারি কথাটা না। দরকারি কথাটা হল………

বলবেন, আমি সরকারের সামান্য গোলাম, আমি কী-ই বা করতে পারি? ভাবুন তো একবার, রবীন্দ্রনাথ আর নজরুল পড়ালেখা না করে যদি এতো ভাল বই লিখতে পারে, আর আপনি তো কত্তকত্ত পড়ালেখা করছেন, তাহলে আপনি তাদের থেকে ভাল কিছু লিখতে পারবেন, আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি! এটা কোন বিজনেস না, বাট এটার গ্যারান্টি আছে, নিষ্পাপ নির্লোভ প্রাপ্তিহীন গ্যারান্টি! গত বছর এক অশিক্ষিত লেখককে দেখে বুঝলাম, এরা সাহিত্যের মা-বাপ’কে নিষ্ঠুরভাবে কান্না করাচ্ছে! আমি বিশ্বাস করি, আপনি পারবেন এমন একটা বই লিখে দিতে, যেটা পড়লে রাজমিস্ত্রি থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত লোকজনও ভালথাকা শিখে যেতে পারবে। নিজেকে একবার ট্রাই করতে দেন না! আপনার যে বইটা বের হবে, ওটা যেন শুধু বই না হয়, স্বপ্নের বাক্স হয়, আমি সে ব্যবস্থা করব। মানে? সহজ মানে। আমি আপনার বইটা প্রকাশ করব নাহয়! বই ভাল না হলে বলে দিবেন, আমি মার্কেট থেকে আমার সব টাকা লস দিয়ে সব বই উঠিয়ে নেবো। হয়ত বলবেন, তুমি পিচ্চি মানুষ, প্রকাশ করার টাকা কই পাবে? ওটা যোগাড় হয়ে যাবে, ভাববেন না! আমি আমার ভালোবাসার শক্তির উপর বিশ্বাস রাখি। বেশি কিছু তো আর চাইছি না। স্রেফ ভালোবাসার মানুষের নামে একটা বই চাইছি, যেটার উপর আপনার নামটা বড়বড় অক্ষরে দেখতে পারবো। আমার তখন কী যে খুশি লাগবে! ওটা না হয় আমার ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে থাকবে। প্লিজ আমার এই অনুরোধটা একটু ভেবে দেখুন না! পাগলদের খুশি করলে স্রষ্টা আপনাকে খুশি রাখবে। এটাকে জোর অথবা রিকোয়েস্ট, যা-ই মনে করেন না কেন, তবু রাখেন। দরকার হলে আমি আপনার বইয়ের লেখা বাছাই করার কাজটা করে দেবো, প্রুফও আমি দেখে দিতে রাজি আছি। আমি কিন্তু খুব বেশি অশিক্ষিত টাইপের না!

জানো, নীল অঙ্কুশ, তুমি আমাকে বেঁচে থাকতে শিখাও, অথচ তোমার নাম ‘নীল’ রেখেছি কেন? কষ্টের রং যে নীল! তুমি না থাকলে আমি অনেক আগেই মরে যেতাম! তুমি আমাকে শিখাও কতটা কষ্ট পাওয়ার পরও নিজের পরিবার সম্পর্কে ভাল কিছু বলা উচিত! যদিও তুমি বুঝতে চাইবে না যে পৃথিবীর কঠিন রূপগুলি দেখা আমি শেষ করেছি, তবুও বলে দিলাম এটা! তবে এটা সত্য যে তুমি কারও কাছে বিয়ের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হলে আমি তোমাকে পটায়েপটায়ে বিয়ে করে ফেলতাম! হা হা হা! এর উত্তরে তুমি কী বলবে, আমি জানি। বলবে, তোমার মতন পেত্নীকে আমি বিয়ে করতামই না! কিন্তু তুমি তো জানো না, আমি যে পরিমাণ পাজি মেয়ে, তেইশ রঙের ফুল দিয়ে তোমাকে প্রপোজ করে বসতাম! এবার নিশ্চয়ই বলবে, তাও রাজি হতাম না! তাহলে আর কী? শ্মশানে জাদুটোনা করে রাজি করিয়ে ফেলতাম! আমিও মৃত, আপনিও মৃত। আমাকে রিফিউজ করবেনই বা কীভাবে! হি হি হি সেখানে তো ভাগ্যের মাইর, তাই ভালোবাসা দিয়েই কাজ চালাতে হবে! হুম্‌! এখন? কী বলবেন এখন? বলবেন, আমাকে সহ্য করা মুশকিল? শুনুন, লোকে সহ্য হয়ে যায় বলে সহ্য করে না, ভালোবেসে ফেলে বলেই সহ্যটা করে। ভালোবাসি, তাই ঠিকই সহ্য করে নিতাম! বেচেঁ গেছেন আমার হাত থেকে! নাহলে প্রতি সকালে ঘুমভেঙে আমার জন্য একটি করে কবিতা বলতে হত! যারা আপনাকে ভালোবাসে, তারা অপেক্ষা করতে পারবে। আর লাইক না পেলে নাকি আপনার মজা লাগে না? ঠিক আছে, তার সমাধানও বলছি! আপনি একটু লিখে দেন যে আপনি বই বের করছেন, দেখেন না কী হয়! আরে বাবা, আপনি যদি স্রেফ এটাও লিখে দেন—সবাই কেমন আছেন? তাতেই লাইকের অভাব হবে না, আর ওটা তো সুখবর! সবাই আপনাকে কত্ত ভালোবাসে, আমার কথা বিশ্বাস করে দেখেন, লাভ হবে!

‘ছোটলোক বড় হলে বন্ধুরে কাঁদায়।’ আপনার এই প্রবাদলাইনটা না একটা নিশ্চুপ গল্প বলে যায়! আপনাকে একটা মজার তথ্য দিই। আপনি কতটা ধনী, তা আপনি নিজেই জানেন না। না হলে পরীক্ষার জন্য এতো বড় নোটও মানুষ পড়ে না, যত কষ্ট করে মানুষ আপনার লেখা পড়ে। মজার কথা কী, জানেন? আপনাকে বহু মানুষ হিংসা করে তাই ইউটিউব দেখে অটোলাইক কীকরে নিতে হয়, তা শিখে নেয়, এরপর তাদের আজাইরা যত পোস্ট, সেগুলি মানুষ পছন্দ করছে, এমন দেখায় সবাইকে, কিন্তু আপনার প্রতিটা লাইক তো খেটে অর্জনকরা! আর জানেনই তো মানুষ ন্যাস্টি পোস্ট বেশি পছন্দ করে আর আপনি যেহেতু খারাপ কথা খুব কম লিখেন, তাই লোকে খুশি হতে পারে না, যারা আপনার ওয়ালে আসে, তারা আসে নেহায়েত ভালোবেসেই। আরেকটা কারণে আপনার পোস্টে লাইক কম, কারণ বাংলাদেশিরা জাজমেন্টাল পোস্ট খুব বেশি পছন্দ করে আর আপনি তো কখনওই কাউকে জাজ করে বা আক্রমণ করে কিছু লিখেন না। অন্য কাউকে জাজ করতে না পারলে একজন বাঙালির নিজের জীবনটাকে অর্থহীন মনে হয়! অটো লাইক, অটো ফলোয়ার, এসবই খুব সস্তা ব্যাপার আজকাল। কথাটা কেনো বললাম, বলি। আচ্ছা, বাদ দেন, না বলি, আপনি জানেনই সব! আচ্ছা, আমিই বা আপনাকে পছন্দ করি কেন? এর কারণ আসলে আমি নিজেও ঠিক জানি না, তবে নিশ্চিতভাবে জানি যে আমি আপনাকে ভীষণ পছন্দ করি। ব্যাপারটা হাস্যকর, তাই না? সবসময় নিজে সুস্থ থেকে লিখবেন, কারণ আপনার মত মানুষ এ দেশের জন্য অনেক বেশিই দরকার। লেখার মধ্য দিয়ে নেশা ধরিয়ে দেয়ার থেকেও বড় যে কাজটি আপনি করে যাচ্ছেন সেটি হল, আপনি আমাদের ডিপ্রেসড প্রজন্মকে উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত সিনেমার গান নিয়ে ভাবতে শেখাচ্ছেন।

আপনার পোস্টে ‘মাথামোটা’ আমাকে ডেকেছেন, তাই না? হুমম্‌! আমি মাথামোটা হলেও ব্যাপারটা কিন্তু ঠিকই বুঝেছি, বলে দিলাম। এই মশাই! আপনার প্রেমিকার প্রয়োজনীয় গুণের এতো বড়বড় লিস্ট দিলে সেসব পূরণ করতেকরতেই তো সব সময় চলে যাবে, ভালো আর বাসবোটা কখন? আচ্ছা অভিমানী লোক তো আপনি! আপনার মেয়ে হওয়া উচিত ছিল! এতো শর্ত তো মেয়েরাও দেয় না! ওরে বাবা! আপনাকে সবসময়ই দরকারি টেক্সট দেয়া লাগবে? কেনো? এমনিতে ভালোবাসি, ভালোবাসি বলে ঘ্যানরঘ্যান করার জন্য টেক্সট বা ফোন করা যাবে না? আমার যদি আপনাকে ‘ভালোবাসি’ বলতে ইচ্ছে করে সেটা তো আর আমার দোষ না, তাই না? এক আপনি ছাড়া আর কাউকেই আমার পছন্দ হয় না। তার উপর আপনি হচ্ছেন মহাকেপ্পন, ভুলেও তো কখনও ডিস্কাউন্টেড ভালোবাসাটা পর্যন্ত ব্যাক করেন না! আমার বয়ফ্রেন্ড তো আর হবেন না কখনও, তাহলে আপনার প্রেমে কীকরে পড়ি, বলেন! আপনি কোনোদিন আমার বয়ফ্রেন্ড যদি হন, স্বপ্নে হলেও, তখন আমি আপনাকে দুম্‌ করে বলে ফেলব, আই লাভ ইউ! জানেন ওই ছেলেটাও আজকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল যে ছেলেটা আপনি আমাদের কলেজে গেলে আমাকে খবর দেবে বলেছিল। এটা আপনাকে বলার কোনও কারণ নেই। কী করব! আপনাকে আমার সবই বলে ফেলতে ইচ্ছে করে! যারা বড়বড় কথা বলে, তারা আসলেই কিছু করতে পারে না। এই কথাটা আপনি ঠিকই বলেন, এজন্য যে মেয়েকে ২ বছর আগে ফেসবুক কমেন্টে সবাই মিলে ধুয়ে দিয়েছিল, ২ বছর পর নতুন আইডি খুলে ওই লোকগুলিই ওকে অ্যাড রিকোয়েস্ট পাঠায়! পৃথিবী কত বিচিত্র, না? জানেন, আপনারটার মত আমারও একটা আইডি কিছু মানুষ খেয়ে দিয়েছে! একটা কথা, কখনও ভালোবেসেও আমাকে ব্লক করে দিয়েন না, তাতে একটা পাগলী আপনাকে দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। আমার পক্ষে ফেক আইডি খোলা কঠিন, ভালোবাসার বিনিময়ে একটু জ্বালা সহ্য করা শিখে যান না! তাও তো মাঝেমাঝে! আপনাকে কত ভাল লাগে, তা জানলে তো আপনি নিজেই নিজেকে ভালোবেসে ফেলতেন।

আচ্ছা শুনুন, একটা উত্তর লাগবে আমার, বলুন না আলাদিনকা জ্বিন মশাই! ধরুন, আটলান্টিকের নীল সমুদ্রে আপনি একা একটি নৌকোয় ভাসছেন তো ভাসছেন, আশেপাশে কিছু নেই, গন্তব্যও অনেক দূর! আপনার কাছে শুধু নৌকাটা আছে, আর কিছু নেই। আপনাকে মৎস্যকন্যারা ডিনার করার জন্য সুললিত কণ্ঠে আর মায়াবী আর্তনাদে প্রচণ্ড অসহ্য করে তুলছে। কান বন্ধ করতেও পারছেন না, কারণ নৌকায় একটি ফুটো, তাতে আপনার আঙুল রাখা। দুই কান বন্ধ করতে গেলে ডুবে যাবেন। আবার আপনি সামনের দিকে যেতেও পারছেন না। এবার দয়া করে বলুনতো, যাবেন কীকরে সেই গন্তব্যে? একটু পাগলামি টাইপ কোয়েশ্চেন, কিন্তু উত্তরটা আমার লাগবে। প্লিজ!

হাহ্‌ হাহ্‌ হাহ্‌! ভয় পেয়ে গেলেন! আপনি পারেন না উত্তরটা, আমিও পারি না, মানে, আপনার সাফল্য ফিফটি-ফিফটি! থাক, বাকি ফিফটি অন্য দিন! এই শোনেন, আপনি আমাকে আবার পচা ভাবেন নাতো? একদমই ওরকম কিছু ভাববেন না, কেমন? রিয়েল লাইফে আমি খুব পাজি, কিন্তু ভাল পাজি, খারাপ পাজি না। আচ্ছা, কেউ যদি আপনাকে শুধু ভালোবাসি বলতেই আসে প্রতিদিনই, আপনি কি তাহলে খুব রেগে যাবেন? যাতে কোনও প্রেম থাকবে না, শুধু ভালোবাসা থাকবে, এমন ভালোবাসা আপনার ভাল লাগে? জানেন, আপনি ছাড়া কারও সাথেই কথা বলতে আমার ভাল লাগে না। এই ভাইয়া, শুনছেন? আপনি এতো কিউট কেন? যদিও আপনি বড় মানুষ, তাও আপনার গাল ধরে টেনে ‘গুগলিমুগলি মুশ’ দিতে ইচ্ছে করে তো! সেদিন মিথ্যে বলেছিলাম, আপনি পাজি শিম্পাঞ্জি না, আপনি একটা কিউট টেডিবেয়ার, যার সাথে খেলা করলে মন ভাল হয়ে যায়।

আজ একজাম ছিল, ভাল হয়নি, আর আমার ধারণা হয়ে গেছে, এ জীবনে আর কখনও একজাম ভাল হবে না। আপনি অনেক মিথ্যা বলেন, স্যার। ছোটবেলায় আমি চোর টাইপের স্টুডেন্ট ছিলাম, বড়বেলাতেও তা-ই। জীবন বদলায় না, আমরাই বদলাই। যেহেতু আমি বদলাই নাই, সেহেতু আমার জীবনও আগের মতই রয়ে গেছে। আচ্ছা, যার মনটা এতো সুন্দরসুন্দর কথা ভাবে, তাকে কেউ ফুল দিয়ে প্রপোজ করেনি, এইটা ডাহা মিছে কথা! কতো ফুলই এসেছে গেছে হয়তো, কিন্তু ইচ্ছে হয়নি নিতে! ঠিক বলেছি না? ফেসবুকে ওই গাঁজাখুরি গল্পটা বানালেন কেন? সুন্দরীদের অ্যাটেনশন সিক করার জন্য? হুহ্‌! শুনুন, আমি পৃথিবীর একমাত্র মানুষ, যার ফুল ভাল লাগে না। হে কল্প মানব! ফুল নিবে, ফুল? নীল, বেগুনি, হলুদ, সবুজ ফুল তুমি চাইলেই এনে দেবো! রক্তজবা কিংবা অভিমানি বকুল হোক না, হয় যদি কাগজি ফুল, তাও! শুধু তোমারই জন্য! এ-ই বা কম কীসে? একদম চুপ করে যে থাকেন, খারাপ লাগে না? আমার সাথে কথা যে বলেনই না একদম, কষ্ট লাগে না? আপনি চুপ থাকলে আমার কথা বলতে ভাল লাগে। মনে হয়, আপনাকে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দ্বারা নিজের নিয়মে উপভোগ করা যায়।

জানেন, আমার কলেজের এক টিচার কী বলেন? আমি নাকি পাগলি, তাই আমাকে বাকি মেয়েরা সহ্য করতে পারে না, কারণ পাগলি মেয়েদের কেউ সহ্য করে না। স্যার কেন এমন করে বলে, আপনি বলেন তো! আমি তো সবার সাথেই ভালভাবে মিশি, তাও ওরা আমাকে এতো অপছন্দ করে কেন? তারা আমার ছবি পছন্দ করে, এমনকি আমার স্টাইল কপি করতে পছন্দ করে। আমার সুনাম করে কি বদনাম করে, তাও বুঝা মুশকিল, তবে আমাকে এতো অপছন্দ করার কী আছে! এতো বড় পৃথিবীতে আমার যে খুব একা লাগে, কাউকে তো আর নিজ থেকে ডেকেও বলতে পারি না, এই শোনো না, তুমি আমার বন্ধু হবে? মোবাইলে চার্জ নাই, আপনিও আজ বেঁচে গেছেন! হু হু হু! আপনি খুশি, আমি না! এই জানেন, হাসলে না আপনাকে খুব বোকাবোকা লাগে………আর আমার খুব ভাল লাগে! এই হাসেন না একটু হি………হি

এই যে শুনুন, আপনি বলেছিলেন, কোনও দিন পাওয়া যাবে না জেনেও পছন্দের কাউকে প্রেমপত্র লেখার মধ্যে এক ধরনের প্রশান্তি পাওয়া যায়। কথাটা সত্যি অনেক কাজের, কিন্তু আপনি ছাড়া কাউকে প্রেমপত্র দূরে থাক ঘৃণাপত্র লিখতেও ভাল লাগে না। ভাল কথা, আপনার পোস্টটায় ওই শব্দ কেটে ভালোবাসাপত্র বানিয়ে দেয়া যায় না? ‘প্রেম’ শব্দটা আমার একদম ভাল লাগে না। ভালোবাসা ভাল শব্দ, প্রেম শব্দটার মধ্যে কেমন জানি একটা ছোঁকছোঁক-করা ব্যাপার আছে! একটা কথা জিজ্ঞেস করলে রাগ করবেন নাতো? লোকে যে সবসময় আপনাকে জ্বালায়, দাদা, এটা বলেন! সেটা বলেন! আমি ভাল নেই, কী করব? প্ল্যান দেন, বুদ্ধি দেন! গান সাজেস্ট করেন, বই সাজেস্ট করেন! কিন্তু আমরা খুব স্বার্থপর, কোনও দিন আপনাকে জিজ্ঞেস করা হয় না, আপনার মন ভাল আছে? কিংবা অফিসে সব ঠিক চলছে তো? মানে, মনে কষ্ট দিয়ে কেউ কিছু বলছে নাতো? সবার পক্ষ থেকে আমি সরি, হ্যাঁ? আর শুনেন, সবাই আপনার মত হতে পারবে না। হ্যাঁ, তাদের টাকা থাকতে পারে, কিন্তু ওটাই সব না। সবাই আপনার মত হাসির ফেরিওয়ালা হয়ে সবাইকে হাসাতে পারে না। সো, নিজের অ্যাত্তোগুলা টেক কেয়ার করবেন। আপনি কিন্তু পাবলিক সম্পত্তি, আমাদের জন্য সবসময় ভালথাকার চেষ্টা করবেন।

আপনাকে সিরিয়াসলিই মাইর দেয়া দরকার! আপনার না শরীর খারাপ? এখনও কী লিখছেন অতো? অনলাইনে কেন আপনি? আমি কোনও দিনই আপনার কাছ থেকে রিপ্লাই আশা করি না, আপনার আরও দশটা কাজ আছে, আমি তা ভাল করেই জানি। আসলে কী, জানেন, আমি তো ম্যাজিক জানি, আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, আপনার শরীর খারাপ, তাই বলছি, আপনি ফেসবুক থেকে বের হয়ে যান আর রেস্ট নেন, প্লিজ। বলতে পারেন, এতো রাতে আমিই বা কী করছি ফেসবুকে? আপনাকে বিরক্ত না করলে যে আমার পেটের ভাত হজম হয় না, তো বদহজম নিয়ে ঘুমানোর কী দরকার, বলেন! ভয় পাবেন না, আপনাকে আমি বিয়ে করছি না। আমার থিওরি হল, নো প্রেম, নো বিয়ে; ইয়েস প্রেম, ইয়েস বিয়ে। কী বুঝলেন? মানে, আমি প্রেম না করে বিয়ে করছিই না। আপনার সাথে প্রেম করা যাবে না, তাই আপনাকে বিয়ে করাও যাবে না। আমার বিয়ে নিয়ে আমি নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি, ওটা আমি কারও জন্য নষ্ট করবো না। আর আমি কিন্তু সবসময় আপনাকে ‘ভাইয়া’ ‘ভাইয়া’ বলতে পারব না, ক্রাশকে কেউ কি ভাইয়া বলে ডাকে নেহায়েত কপাল না পুড়লে? আমার কপাল তো এখনও পুড়ে নাই, তাই না? ‘নীল অঙ্কুশ’ নামটা সুন্দর না? আপনার পছন্দ না হলেও ওটাই আপনাকে ডাকবো। ছোটবেলা থেকেই আমি একটু গোঁয়ার হয়ে আছি এখনও। কী আর করা যাবে, বলেন! মাঝেমাঝে অনধিকার চর্চা করবো, তবে সেটা সম্মান দিয়ে!

ভাল কথা, আপনার একটা লেখা পড়ে ভয় পেয়েছি, বলেছিলাম। আজকেও এমন হল। আপনার এই ধরনের লেখা আগে আমি পড়তাম না। একজনের গল্প যেগুলো, সেগুলো। পড়তাম সার্বজনীন, সামাজিক, একের হয়েও বহুজনের গল্প। আজকে একটা পড়েছিলাম। পড়ার পর আপনাকে লিখব কি লিখবো না, ঐরকম একটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম বলে আপনাকে লেখার ইচ্ছার মধ্যে একটা আশংকা সৃষ্টি হলো। ঐ লেখা পড়ে আরেকটা বিষয় মনে হয়েছে, কী, জানেন? যেন আপনার লেখা কথাগুলির সাথে আমার কথাগুলির অধিকাংশ মিলে যায়। পড়ার সময় মনে হয় যেন, আপনার লেখা থেকেই, আপনার জানাশোনা কথাগুলোই বা আপনার কথাগুলোই আপনাকে একইরকম ভাবে কখনও বলেছি বা ওই মুহূর্তে বলছি! আমার খুব আশ্চর্য লাগছিল দেখে! তারপর মনে হয়েছে, আমি যা-ই বলব, তা-ই আপনার আগে থেকে জানা বা শোনা। তাহলে শোনা কথাগুলোই আবার শুনতে আপনার ভাল লাগবে কেন? আমি তো আর আপনার মত কথার কারিগর না যে নতুননতুন কথার মালা গাঁথতে পারব। আপনার লেখার যথাযথ মর্মার্থ বুঝতে পারা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার আপনার সাথে কথা বলার সাহস দেখাই! বুঝুন অবস্থাটা! আমার ভাল লাগে আপনার কথা পড়তে। আর অতীব সাধারণ জীব হিসেবে এরকম মেধাবী প্রতিভাবান মানুষের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে সাধারণ মনের কোণে ভয়ের উদ্রেক হয়ই। নিজের অজান্তেই হয়। বাঁধিয়ে রাখব আপনার কথাগুলি।

কোন লেখা পড়ে ভয় লেগেছে? বলছি। তার আগে আর একটা কথা বলে নিই, যদি বিরক্ত না হন।

আরেকটা কথা, মানে, আরেকটা বিশেষ ভয়ের কথা। বলব?

বলছি। আরেকটা ভয় হলো, আপনার এই খোলাখাতায় (আপনার ইনবক্স) আমার যত কথা, কোনও সময় যদি গল্পে রূপ নিয়ে, সেই বিশেষ জায়গায় ঠিকানা পায় আবার! ওরকম কিছু হলে তো আপনাকে আর কোনও দিন কিছু লিখতে পারব না। যে কথাটা আগে একবার বলেছিলাম, আবার বলতে হচ্ছে যে, আপনাকে প্রথমে লেখার সময় আমার কাছে মনে হয়েছিল, যদিও আমি নামঠিকানা জেনেই কিছু কথা লিখে পাঠিয়েছিলাম, তবু সে ঠিকানায় তা পৌঁছবে না। আপনার চোখেই পড়বে না, কারণ অনেকেই তো লিখে! উড়ো চিঠি হয়ে বাতাসে উড়ে বেড়াবে, কোনও উত্তর আসবে না, তখন এরকম ধারণাই ছিল। আসলো বলেই তো ভয়, কারণ এগুলো আপনার গল্পকথার রূপ নিয়ে না জানি কী হয়! ওটা না হলেই ভাল হয়, কেমন? অবশ্য, আমি নিজেও আমার কিছু পোস্টে আপনার লেখার লাইন তুলে দিয়েছি। যদি আপনার কোনও কথা আমার লেখায় চলেও আসে, সেটা ভাললাগা আর শ্রদ্ধা থেকেই, এটাকে ইতিবাচকভাবেই নেবেন। আপনি রাগ করেন আপনার লেখা কেউ কপি করলে, আমি দেখেছি। আপনার জায়গায় আমি হলে তো খুশিতে নাচতাম! আমার প্রথম দিকের অনেক কবিতা বাংলাদেশের এক নামকরা কবির নিজের কবিতা বলে পরিচিত। এটা নিয়ে আমি কোনও দিন ভাবিইনি। বরং উনার প্রতি কৃতজ্ঞ হয়েছি। আপনার সেদিনের লেখাটি পড়লাম, আপনি তো কথার কারিগর, ওই কথার পরে কী কথা বলা যায়, তা খুঁজে পাওয়া তো আমার জন্য কঠিন। তবু আমার নিজের যা মনে হয়, তা বলছি। কিছু ইংরেজি ব্লগে আমার অন্তত পঞ্চাশটি লেখা আছে। আমি একসময় ইংরেজিতে লিখতাম। ওই লেখাগুলি আছে অনেক ফেমাস লোকের নামে। আমি কিছু মনে করি না। অনেক মানুষ আমার লেখা পড়ছে, এটা আমাকে আনন্দ দেয়। আমার ওই লেখাগুলি, যেগুলি আপনি পাননি বা আমি আপনাকে পাঠাইনি, পাঠিয়ে দেবো ভাবছি। আপনি আমার চিঠি পড়লে আমি কৃতজ্ঞ, সম্মানিত ও খুশি হবো। হয়ত আমার কথা শুনে মনেমনে বলছেন, ওহ্‌! তা হয় কীকরে! আপনার লেখা আরেকজন তার নামে ব্যবহার করবে আর আপনি চুপ করে তা হতে দেবেন! অ্যাত্তো উদার আর অ্যাত্তো ভাল হলেও হয় না! এটা নিয়ে একটা মজার ব্যাপার আছে। বলতে গেলে অনেক কথা বলতে হয়। জগৎবিখ্যাত অনেক সৃষ্টিশীল মানুষই প্ল্যাজিয়ারিস্ট। অনেক কথা লিখতে হয় সেসব লিখতে গেলে। পরে কখনও বলব। একটা ছোট্ট তথ্য দিই। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের আস্ত একটা কবিতার বইয়ের প্রায় সব কবিতাই উনার বন্ধু তন্ময় দত্তের লেখা। প্রেমেন্দ্র মিত্রের অনেক কবিতা নিশিকান্ত রায়চৌধুরী নামের একজন অতি শক্তিশালী কিন্তু চরম উদাসীন কবির লেখা। তন্ময় দত্ত পরবর্তীতে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বড় চাকরিতে ঢুকে গিয়েছিলেন। উনাকে নিয়ে উনার বন্ধু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, তন্ময় কবিতা লিখে গেলে আমাদের কবিতা কেউ পড়তই না। নিশিকান্ত ভারতের পণ্ডিচেরী আশ্রমে থাকতেন। শ্রী অরবিন্দের শিষ্য ছিলেন। অদ্ভুত রকমের প্রতিভাবান এ কবি কলম হাতে নিলেই অনর্গল লিখতে পারতেন। কোনও কবিতা লিখে ফেলার পর সেটা নিয়ে উনার কণামাত্রও কোনও আগ্রহ থাকত না। এরকম করে উনার অনেক কবিতার পাণ্ডুলিপি-খণ্ড হারিয়ে গেছে অসীম হেলায়। বাকিটা অনুমেয়। অবশ্য, এসব সাহিত্যতর্ক এখনও শেষ হয়নি, চলছে, এবং সম্ভবত অমীমাংসিতই থেকে যাবে। হয়ত ভাবছেন, তাই নাকি! এরকমটাও মানুষ করতে পারে! আজব দুনিয়ার মানুষ! কী লাভ হয়? আমি বলি, লাভ তো হয়ই! কত লোক পড়ল! এটাই লাভ। পড়াটাই বড়। আমার মত ছোটো মানুষের লেখাও লোকে মুড়িমুড়কির মত চুরি করে। আগে রাগ করতাম, বয়স বাড়ার সাথেসাথে রাগ করি না, আনন্দ হয়। এই লাভকে হয়ত আপনি লাভ বলে মানতে পারবেন না, কিন্তু আমি ভাবি, লোকে পড়ে আনন্দ নিক না, সে যে করেই হোক!

বাদ দিন। আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে। আপনার প্রতিও হচ্ছে। হোক। রাগ ভাল। অন্যায় যে করে, আর অন্যায় যে সয়, তাদের দুজনকেই কী বলে, আপনি জানেনই! আর আপনি অন্যায়ের অন্যায্য কাজের বিরুদ্ধে এত লিখেন, আর নিজের সাথে অন্যায়ের ক্ষেত্রে নির্বিকার। ওরা কেন আপনাকে আপনারই ওয়ালে এসে যা মুখে এলো, তা-ই বলে গেল? আমিও অন্যায় করি। অতো পাপপুণ্যের হিসেব করলে অনেক সময় চলে যাবে, আর আসল কাজ একটাও করা হবে না। একটা লেখা লিখতেও কত সময় চলে যায়, বইপড়া তো আরও কষ্টের, ওদিকে আপনার চাকরি তো আছেই! এরপর আবার কে কী করল, তার হিসেব! ওরে বাবা! বুঝি সবই, কিন্তু ওই যে বললাম, রাগ হয়! যা-ই হোক, আপনিও পাপ করেন, মানছি। আমিও ধোয়া তুলসীপাতা না। সবাই কিছু না কিছু অন্যায় করে। কিন্তু অন্যায়ে-অন্যায়ে তফাৎ আছে। ঠিক আছে, হিসেবনিকেশ করা লাগবে না। যান, প্রতিবাদও করা লাগবে না, কোনও অ্যাকশনও নিতে হবে না। মারামারি মিছিল ঝগড়া ফ্যাসাদ করা লাগবে না। প্রতিরোধমূলক কিছু করেন, যেন আর ওরকমটা না হয়। অ্যান্টি ভাইরাস প্রোটেকশন দিয়ে রাখেন। হাহাহাহা! আমি আপনার আরও লেখা চুরি করব। সবাই দেখুক! কত্ত সুন্দর লিখেন আপনি! পড়ুক, আনন্দ পাক। আর ওই বিষয়ে বলতে চাচ্ছি যে, বলব? ধরুন, আমার লেখা কেউ কপিপেস্ট করল। অমনিই খুশিতে আমি আপনার চেয়েও বেশি নাচতাম, নাচতে জানলে। (আপনি নাচতে জানেন, আমি নিজ চোখে দেখেছি।) তবে আমার এই টেক্সটগুলি আমি তো আর সবার কাছে লিখিনি, শুধু আপনার কাছে লিখছি। আমি অবশ্যই সবার জন্য না। তাই প্লিজ ঐ কাজটা করবেন না। আপনার ইনবক্স ভারি মনে হলে সবগুলো লেখা কেটে ফেলে দেন। তাও ভাল। সবাইকে আনন্দ দেয়ার মতো ভালভাল লেখার যথেষ্ট সামর্থ্য আছে আপনার। আর যদি মনে হয়, আপনার ইনবক্স অযথা ভারি হচ্ছে, তাহলে নির্দ্বিধায় বলতে পারেন। সত্যি বলছি, আমি কিচ্ছু মনে করব না। ইনবক্স আর ভারিও করব না। আপনি যা ইচ্ছে, তা লিখে আমাকে পাঠাতে পারেন। ওতে আমার ইনবক্স ভারি হবে না, সমৃদ্ধ হবে। আমার কথা হল, এ পৃথিবীতে মোট লেখা বাড়ুক। সবাই লেখা পড়ুক রুচিমাফিক। আপনি ভাবেন, ইসস্‌ এতো কষ্ট করে লিখলাম, আর সেটা আরেকজন চুরি করবে! আগে আমিও আপনার মত ভাবতাম। এখন আর ভাবি না।

এই যে এতো উপনিষদ আছে, সেগুলির লেখক বা লেখকদের নাম কি কেউ জানে? কেন জানে না, জানেন? যে সকল ঋষি এসব জ্ঞানের আকরগ্রন্থ উপনিষদ লিখেছেন, তাঁরা অমন অমূল্য সৃষ্টির স্রষ্টা হিসেবে কোনও কৃতিত্ব নিতে কুণ্ঠাবোধ করতেন। শিষ্যদের প্রতি তাঁদের কড়া নির্দেশই ছিল, যাতে কেউ কক্ষনো কাউকে না জানায় কোন স্তোত্রটি কার রচনা! জ্ঞানের সৃষ্টি মানুষের কল্যাণে, নিজের কৃতিত্ব বাড়ানোর জন্য নয়। তবে আমার লেখা ভুলেও কাউকে জানাবেন না! দারুণ সাংঘাতিক মানুষ আপনি! তাই ভয়ে কাতর হয়ে আছি, যদি আমাকে মারতে আমার লেখা পাবলিক করে দেন! ওরে বাবা! সবাই পড়ার জন্য আর সবার আনন্দের জন্য আপনার লেখাই যথেষ্ট। আপনি আর আমি সমান নাকি? আপনি অসাধারণ, আমি সাধারণ। তাই অসাধারণ বিষয় হজম করা দুরূহ আমার জন্য! করবেন নাতো? ভয় আগে আমার অনেক ছিল, এরপর কোত্থেকে সাহস এসে গেল, অসীম সাহস! সাহস আর বাড়াতে চাই না। সাধারণভাবে বাঁচার জন্য আমার সাহস যা আছে, তাতেই হবে। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আপনাকে বলে বোঝানোর মতো অত ভাষা আমি জানি না। দয়া করে আপনি নিজে থেকে আমার ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করলে আমার ভাল লাগবে। আপনার সাথে কথা বলার সময়, মানে, আপনাকে লিখে যাওয়ার সময় আমার হার্টবিট বেড়ে যায়। টেনশনে পড়লে আর রেগেমেগে এক্সাইটেড হয়ে গেলে আমার মুখে সিলেটি ভাষা চলে আসে। আমি কিন্তু এমনিতেও প্রমিত ভাষায় ততটা ভাল কথা বলতে পারি না। ভয় রাগ টেনশন হলে তো আরও পারি না। তাই তখন কথা বলতে কষ্ট হয়।

আপনার লেখায় পেয়েছি, আপনি লিখেছেন, সিলেটি ভাষা অনেক কিউট আর সেক্সি একটা ভাষা। আমার খুউব ভাল লাগে। সিলেট। সিলেটি মানুষ। সিলেটি ভাষা। সিলেট মানেই ভালোবাসা! চট্টগ্রামের পর সিলেটের চাইতে সুন্দর আর কোনও জায়গা নেই। সিলেটকে যে কী পরিমাণ ভালোবাসি, কেউ তা ভাবতেও পারবেন না! বেশিই ভালোবাসি! এক সিলেটি মেয়ে আমাকে অদ্ভুত রকমের ভালোবাসত। তবে সে দেরিতে জানিয়েছিল। ও এখন বিবাহিতা। আমার কিচ্ছু করার ছিল না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে আফসোস আমার যাবে না। প্রচণ্ড নিঃস্বার্থভাবে সে ভালোবাসত। এখনও মনে হয়, সব ছেড়েছুঁড়ে ওর হাত ধরি! সিলেট নিয়ে কেউ বাজে কিছু বললে ভীষণ কষ্ট পাই। আমার সেকেন্ড হোম সিলেট হলে দারুণ হত!