সুখের কৈফিয়ত

 বল দেখি তুই সত্যি করে, স্বস্তিটুকুর দিব্যি ধরে,
অতীত বেচে অতীত ধুয়ে অতীতঘরে মুখ লুকিয়ে,
বাঁচিস কীসে?
অতীতস্মৃতির রোমন্থনে,
কষ্ট যাদের, দেখতে লাগে সুখের মতো--
তাদের নিয়েই মাতিস সুখে!
দিনের পিঠে দিন ফুরোলে, রাতের বেশে আঁধার এলে,
বাঁচিস তাও দুঃখ ঘিরে!
কেমন করে?
বেদনাটুকু জিইয়ে রাখিস চোখের জলে--
যেমনি বাঁচে গোলাপকাঁটা যত্নে অতো--
তেমনি করেই অভিমানে,
যন্ত্রণাকে সঙ্গী মেনে,
কষ্টবিলাস আপন জেনে,
কোন সুখে তুই বাঁচিস এমন?
দুঃখ যেটুক, তোর একারই--
ফোয়ারা সুখের পেছন রেখে,
শুধুই কেন ভাবিস তেমন?
 
হ্যাঁরে বিধি, মানছি সবই সত্যি অতি!
এই যে আমি, অতীত নিয়েই ভীষণ বাঁচি--
যেমনি আছি প্রায় প্রতিদিন, বড্ডো বেশি!
আমার বাঁচা, আমার জীবন, আমার ধরন,
সবই ঘোরে আমার পথে, আমার মতন।
কম সুখেতে স্বস্তি বেশি--কেউ না বুঝুক, আমি তো বুঝি!
তাইতো আমি--
যুগ দুয়েকের আগের সুখেও
একই সুখে নিভৃতে হাসি!
যোগবিয়োগে মিলিয়ে ভাবি, ভালোই আছি!
সুখ যদি আর নাও আসে
এই জীবনে,
দুঃখ কীসের?
নতুন সুখের পরশ এসে,
নতুন প্রাণের নতুন দেশে,
নতুন দোলায় জীবন সাজায় যখন সবার,
ঠিক তখনও এমনি করেই,
অতিথিসুখের আমন্ত্রণে থাকবো সরে হেলায় দূরে।
সুখের জোয়ার দিব্যি ভুলে, অতীতসুখেই
থাকবো বেঁচে--এ বিশ্বাসেই বেশ তো আছি!
বিধি ওরে! বলতো দেখি,
দোষ কী ওতে?
জীবন নাহয় কেটেই যাবে,
অতীত মোহের নতুন সাজে!
ছোট্টবেলার প্রজাপতি যেমনি ওড়ে রঙ ছড়িয়ে,
এই এখনো মনের মাঝে।
ঝোপের মতো সেই গাছটি,
আজো ফেরে, ঘুরে-ঘুরে আমায় টানে,
দূর ও বনে--যখন দেখি,
এই শহরের চিলেকোঠায়, অফিসছাদে
দিন ফুরিয়ে বিকেল নামে।
ছোট্ট জীবন, একটাই তো!
যাবেই কেটে--
রঙিন ঘুড়ির সুতোয় উড়ে,
প্রজাপতির ডানায় ভেসে,
স্বপ্নে বেঁচে হাওয়ায় ঘুরে,
অল্পেসুখ’এর দারুণ দেশে!