সুখের মাপে দুঃখযাপন

 
হে আমার জন্মজন্মান্তরের দিনপঞ্জি,
তুমি কি জানো, যখন কেউ কাউকে খুব ভালোবাসে,
তখন সেই মানুষটিকে সে কারও সাথে ভাগ করতে পারে না।


অথচ আমার ভাগ্য দেখো,
আমি জানি, তুমি অন্য কারও অধিকারে।
তুমি তাকে আদর করবে, ভালোবাসবে, এটাই সমাজের নিয়ম,
সমাজ এটাই আশা করে। অথচ এটা ভাবলেই
আমার মনে কী এক প্রবল ঝড় ওঠে,
আমাকে এলোমেলো করে দেয়!


আমি জানি, এই মনের ঝড়টা কেবলই আমার আবেগের প্রভাব।
ভেবো না! আমি আমার আবেগ ও বিবেকের
সকল ধরনের অবস্থা ও অবস্থানের সাথে মানিয়ে নিতে সব্যসাচী!


তোমাকে অন্য কারও সাথে থাকতে দেখে
এই আবেগ যখন আমায় অনেক যন্ত্রণা দেয়,
তখন মনে হয়, যদি এই মুহূর্তেই আমার সব কাজ শেষ হয়ে যেত,
এই পৃথিবীর কাছে আমার যত দায়, যত দেনা, সব সম্পন্ন থাকত,
আর ঠিক তখুনিই আমার আরাধ্য
আমায় মৃত্যুর খাম পাঠিয়ে ডেকে পাঠাতেন,
সত্যিই আমি সহাস্য প্রস্থানে চলে যেতাম তাঁর কাছে।


হায়, কী করব আমি!
আমার সময় যে আসেনি এখনও!
দায় কি দেনা, মেটেনি কিছুই!
তাই মৃত্যু আসে না, কেবলই বিবেক আসে।
এসে আমায় ঠিক সামলে নেয়। আর বলে,
ভেবো না অত! নিয়তিকে বোলো না কিছুই!
তোমার প্রেম যদি সত্য হয়, তবে একটাসময়,
বিধাতা তোমায় দেবেন ঠিকই, যা চাইছ তুমি এত করে।


ভেতর থেকে কে যেন বলে,
ওঠো! জাগো! ভেঙে পোড়ো না!
...শুনে তখুনি দুচোখ বন্ধ করি!
মা বসুমতী সামনে আসেন।
ভাবি, এত যে তাঁকে আঘাত করি,
তাঁর বুকের মধ্যে এত যে আগুন,
তবু সবই তো তিনি সহ্য করেন!
মুখে মেখে নেন চন্দনঘ্রাণ, সে ঘ্রাণের
সোহাগিছোঁয়ায় পৃথিবীকে দেন জীবনের গান।


ভালোবাসি, তাই সুখের মাপেই চোখে দুঃখ মাখাই।