স্কুলে যে-বাংলা শিখিনি/দুই

 
আজকে থেকে যাও, ভাই। (আজকে থেকে যাও ভাই।) [কাউকে বা কিছুকে সম্বোধনের ক্ষেত্রে তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা শব্দের আগে বা পরে একটা কমা দিতেই হবে। কয়েকটি উদাহরণ দেখা যাক। ‘যাত্রা শুভ হোক, ভাই!’ ‘আজকে তো বাবা বাসায় নেই, স্যার।’ ‘জলের বোতলটা, ভাই!’ ‘কী খবর, নীলা?’ ‘ফিরে এসো, চাকা।’ এরকম।]
একি কথা শুনি আজ তোমার কাছে! (এ কি কথা শুনি আজ তোমার কাছে!) একি, তুমি এখনও যাওনি? (এ কি,/এ কী,/একী, তুমি এখনও যাওনি?) এ কী নিয়ে এসেছ? (এ কি নিয়ে এসেছ?) [একি: বিস্ময়সূচক অব্যয়, এ কেমন/এরূপ অর্থে। অপরদিকে, ‘এ কী’ অর্থ ‘এটা কী’, যেমন এ কী করছ, তুমি কি জানো? কিংবা ‘এটা কি’, যেমন এ কি সত্য, না কি স্বপ্ন? এরকম কিছু অব্যয়: একি, সেকি, ওমা, বলেকি, বলোকি ইত্যাদি। তবে, অব্যয়পদ না হলে আলাদাভাবে বসবে। যেমন সে আর তেমন কথা বলে কি? আমি বলি কী, আর তুমি বলো কী! সে কি আর আসবে! সে কী কাণ্ডটাই না ঘটে গেল!]
হ্যাঁ রে ব্যাটা, আমিও গিয়েছিলাম। (হ্যাঁরে, ব্যাটা, আমিও গিয়েছিলাম।) রে পাপিষ্ঠ, তুই দূর হ এক্ষণ! (রে, পাপিষ্ঠ, তুই দূর হ এক্ষণ!) হায় রে কপাল মন্দ! (হায়রে, কপাল মন্দ!) মন রে কৃষিকাজ জানে না! (মনরে কৃষি কাজ জানে না!) বাছা, আয় রে আয়! (বাছা আয় রে আয়!) কাঁদে রে চাঁদ তোর দুঃখ দেখে! (কাঁদেরে চাঁদ তোর দুঃখ দেখে!) গোপাল রে, তুই কই গেলি, বাপ! (গোপালরে তুই কই গেলি, বাপ!) সে কী কথা রে বাবা! (সে কী কথারে, বাবা!)
ব্যাখ্যা: ‘রে’ আলাদা বসবে। সম্বোধনের ক্ষেত্রে: রে-এর পর, রে-এর সাথে সম্বন্ধযুক্ত শব্দের আগে নয়, পরে কমা বসবে।
কিরে, ভাত খাবি না? (কী রে, ভাত খাবি না?) সে কিরে, তুই যাসনি এখনও? (সে কী রে, তুই যাসনি এখনও?) [‘কিরে’ নিজেই অব্যয়পদ, এর পরে কমা বসে।]
‘-র’, না কি ‘-এর’? শব্দটি যদি হয় স্বরান্ত (শেষে স্বরধ্বনিবিশিষ্ট), তবে ‘-র’ বসবে, আর ব্যঞ্জনান্ত (শেষে ব্যঞ্জনধ্বনিবিশিষ্ট) হলে বসবে ‘-এর’। যেমন কমলের, শঙ্খর, সুশান্তর, মানুষের ইত্যাদি।
হৈমন্তীর একুল-ওকুল দুকুলই গেল! (হৈমন্তীর একূল-ওকূল দুকূলই গেল!) [‘কূল’ অর্থ নদীর কিনারা, ‘কুল’ অর্থ বংশ।]
এই তো মাত্রই এলাম! (এইতো মাত্রই এলাম!)
শিশুটি এক-পা দুই-পা করে এগিয়ে যাচ্ছে। (শিশুটি একপা-দুইপা করে এগিয়ে যাচ্ছে।)
এয়ারপোর্টে পৌঁছে এয়ার ফোর্সের এক পুরনো বন্ধুকে পেলাম। (এয়ার পোর্টে পৌঁছে এয়ার-ফোর্সের এক পুরনো বন্ধুকে পেলাম।) [অনুরূপ: এয়ার হোস্টেস।]
এসব/এইসব খেলাধুলা ফেলে এ সময় পড়ায় একটু মন দাও। (এ সব খেলাধূলা ফেলে এসময় পড়ায় একটু মন দাও।) [অনুরূপ: সেসব, সেইসব, সে সময়, সেই সময়।]
বাসের অপেক্ষায় সে বিশ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল। (বাসের অপেক্ষায় সে বিশ মিনিট দাঁড়িয়েছিল।) স্যার ক্লাসে ঢুকতেই ওরা সবাই দাঁড়িয়েছিল। (স্যার ক্লাসে ঢুকতেই ওরা সবাই দাঁড়িয়ে ছিল।) [অনুরূপ: বসেছিল/বসে ছিল, শুয়েছিল/শুয়ে ছিল, এগিয়ে ছিল ইত্যাদি। টেকনিক: Duration বোঝাতে মাঝখানের গ্যাপটা হবে।]
সে যা শুনেছে, তা-ই বলছে, তাই তাকে বিশ্বাস করা যায়। (সে যা শুনেছে, তাই বলছে, তা-ই তাকে বিশ্বাস করা যায়। ‘So’ বোঝাতে ‘তাই’, অন্য ক্ষেত্রে ‘তা-ই’।)
এমন স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ঘরের বাইরে বেরোতে ইচ্ছে করে না। (এমন স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় ঘরের বাইরে বেরোতে ইচ্ছে করে না।) [অনুরূপ: ক্যাঁটকেঁটে রং, প্যাচপেচে কাদা, ল্যাগবেগে শরীর।]
আমার জন্য কী এনেছ? (আমার জন্যে কী এনেছ?) [অনুরূপ: দেয়া, নিকেশ, নেয়া, মধ্যে দিয়ে, সন্ধে, হিসেব ব্যবহার না করে দেওয়া, নিকাশ, নেওয়া, মধ্য দিয়ে, সন্ধ্যা, হিসাব ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কবিতায় প্রায় সময়ই সাতখুন মাফ!]
আমার বাবা একজন অ্যাডভোকেট। (আমার বাবা একজন এডভোকেট/এ্যাডভোকেট।) [অনুরূপ: অ্যাটর্নি, অ্যাফিডেভিট, অ্যাভিনিউ, অ্যান্ড, অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যাডিশনাল ইত্যাদি। টমাটো/টম্যাটো (টমেটো নয়)]
তার মনে ঈর্ষা ক্রোধ লোভ দ্বেষ ছিল না।/তার মনে ঈর্ষা, ক্রোধ, লোভ, দ্বেষ ছিল না। [এখানে কমা দিলেও চলে, না দিলেও চলে।]
সত্যি বলতে কী, আমিও সে-সময়/সে সময় ওখানে ছিলাম। (সত্যি বলতে কী আমিও সেসময় ওখানে ছিলাম।) [অনুরূপ: বাক্যের শুরুতে পক্ষান্তরে, অধিকন্তু, অন্যদিকে এ-সব শব্দের পরও কমা বসবে।]
যাক, আপদটা গেছে! (যাক আপদটা গেছে!) [অনুরূপ: এমন-কী/এমনকি, যা-ই হোক ইত্যাদি।]
সে নিমন্ত্রণে গেল না, এমন-কী/এমনকি বিকেলের সভায়ও না। (সে নিমন্ত্রণে গেল না, এমনকী, বিকেলের সভায়ও না।)
তিনি বললেন যে, যে-দিন তিনি আসবেন, সে-দিন যেন আমরা সবাই উপস্থিত থাকি। (তিনি বললেন যে যে দিন তিনি আসবেন, সে দিন যেন আমরা সবাই উপস্থিত থাকি।) [‘যে’ যদি সংযোজকের কাজ করে, তবে তার পর একটি কমা দিতে হবে, অন্য ক্ষেত্রে ‘যে-’ এভাবে লেখা ভালো।]
সে এল, কেননা তাকে আসতে বলা হয়েছিল। (সে এল, কেননা, তাকে আসতে বলা হয়েছিল।) [যেহেতু, কেননা, কারণ, যেমন এ শব্দগুলির আগে কমা হয়, পরে নয়।]
আচ্ছা, যদি সে যায়, তবে আমিও যাব। (আচ্ছা যদি সে যায় তবে আমিও যাব।)
হ্যাঁ ভাই, ঠিকই বলেছ! (হ্যাঁ, ভাই, ঠিকই বলেছ!) তো রাহুল, শেষ পর্যন্ত কী ঠিক করলে? (তো, রাহুল, শেষপর্যন্ত কী ঠিক করলে?) [বেশ, হ্যাঁ, তো, তা এ-সব বাক্যের শুরুতে বসলে, তাদের পর কমা বসবে। তবে শব্দগুলি সম্বোধনে ব্যবহৃত হলে কমাটা বসবে যাকে সম্বোধন করা হচ্ছে, তার পরে। এই শব্দগুলি একসাথে বসে: শেষকালে, শেষকৃত্য, শেষজীবন, শেষতম, শেষমেশ, শেষদিন, শেষনিদ্রা, শেষনিশ্বাস, শেষপ্রতিজ্ঞা, শেষপ্রান্ত, শেষবিদায়, শেষযাত্রা, শেষরক্ষা, শেষরাত্রি ইত্যাদি। এই শব্দগুলি একসাথে বসে না: শেষ কথা, শেষ কষ্ট, শেষ বাক্য ইত্যাদি।]
অঙ্কে লিখলে অনুদানের পরিমাণ ১০,১,০০১,৩৫৩ টাকা। (অংকে লিখলে অনুদানের পরিমাণ ১০১০০১৩৫৩/১০১,০০১,৩৫৩ টাকা।) [বাংলায় লিখলে শতক, হাজার, লক্ষ, কোটির জায়গায় কমা দেওয়া হয়। ইংরেজিতে লিখলে পেছন থেকে শুরু করে তিন ঘর পরপর কমা বসানো নয়। যেমন ইংরেজিতে লিখলে 101,001,353 লিখতে হবে।]
আজকের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৯/ডিসেম্বর ২, ২০১৯/দোসরা ডিসেম্বর, দুইহাজার উনিশ। (আজকের তারিখ ২ ডিসেম্বর, ২০১৯/২রা ডিসেম্বর ২০১৯।) [লক্ষণীয়: পয়লা, দোসরা, তেসরা, চৌঠা।]
তাঁর লেখার শুরুতে সব সময়ই ‘চট্টগ্রাম, ৫ এপ্রিল’ এভাবে স্থান-তারিখ লেখা থাকত। (তাঁর লেখার শুরুতে সব সময়ই ‘চট্টগ্রাম ৫ এপ্রিল/৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম/৫ এপ্রিল, চট্টগ্রাম’ এভাবে স্থান-তারিখ লেখা থাকত।)
তাঁর হাতে মিষ্টির হাঁড়ি ছিল, এবং সে-কারণেই তিনি বেলটা টিপতে পারেননি। (তাঁর হাতে মিষ্টির হাঁড়ি ছিল এবং সে-কারণেই তিনি বেলটা টিপতে পারেননি।) [এবং, আর ইত্যাদি শব্দের পর clause (শব্দবন্ধ) থাকলে তাদের আগে কমা বসবে।]
কী খাবেন? চা, না কফি? (কী খাবেন, চা, না কফি?) তুলনীয়: এটা তোমার সিদ্ধান্ত, না কি তোমার বাবার? (এটা তোমার সিদ্ধান্ত? না কি তোমার বাবার?)
এখন কী করা উচিত? এমন প্রশ্নই তাকে বারবার ভাবিয়ে তুলছে। (এখন কী করা উচিত, এমন প্রশ্নই তাকে বারবার ভাবিয়ে তুলছে।)
ওই খুনিটা আসলে একসময় ভালো(?)/ভালো(!) লোক ছিল। (ঐ খুনীটা আসলে এক সময় ভালো লোক ছিল।) [‘ঐ লোকটা’ নয়, ওই লোকটা; ‘ঐ রকম’ নয়, ওই রকম। কোনও শব্দের পরে ‘?’ ‘!’ ব্যবহার করার মানেই হলো, শব্দটি আসলে কটাক্ষ-প্রকাশে ব্যবহৃত হয়েছে।]
এখানকার মিষ্টি তো বিখ্যাত! (এখানের মিষ্টি তো বিখ্যাত!) [ওখানকার, যেখানকার, সেখানকার; ওখানের, যেখানের, সেখানের নয়।]
তুমি ওড়িয়া/ওড়িশা ভাষায়ও কথা বলতে পার? (তুমি উড়িয়া/উড়িষ্যা ভাষায়ও কথা বলতে পার?)
বলোকি, সেও এমন করে বলছে! (বল কী, সেও এমন করে বলছে!) [লক্ষণীয়: আমিও, তুমিও, সেও, তারাও, তোমরাও, আমরাও ইত্যাদি। তবে তা-ও, না-ও, এ-ও ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ আমি কাল না-ও আসতে পারি। এ-ও বুঝি জানতে না, মশাই!]
বাঃ, দারুণ তো! (বাঃ দারুণ তো!) যাক বাঁচালে! (যাক, বাঁচালে!)
বেচারার বই বাজারে যত কাটে; পোকায় কাটে ঢের বেশি। (বেচারার বই বাজারে যত কাটে, পোকায় কাটে ঢের বেশি।) [তুলনাত্মক বা বৈপরীত্যমূলক দুটি বাক্যের মাঝে কমা নয়, সেমিকোলন বসে।]
তার থলেতে ছিল বই, কলম; মাছ, সবজি; চাল, ডাল। (তার থলেতে ছিল বই, কলম, মাছ, সবজি, চাল, ডাল।) তিন দিকেই তার সুবিধা---এক, সেখান থেকে তার বাসা কাছে; দুই, সে সেখানেই যেতে চাইছে অনেক দিন ধরেই; তিন, তার আগের বন্ধুরাও সেখানে আশেপাশেই থাকে। (তিন দিকেই তার সুবিধা, এক, সেখান থেকে তার বাসা কাছে, দুই, সে সেখানেই যেতে চাইছে অনেক দিন ধরেই, তিন, তার আগের বন্ধুরাও সেখানে আশেপাশেই থাকে।)
সবাই তো একই রুচির নয়; কারও মাছ পছন্দ, কারও সবজি, কারও মাংস। (সবাই তো একই রুচির নয়, কারও মাছ পছন্দ, কারও সবজি, কারও মাংস।)
ফিরে-পাওয়া ছেলেকে নিয়ে মায়ের দিন কাটছে। (ফিরেপাওয়া/ফিরে পাওয়া ছেলেকে নিয়ে মায়ের দিন কাটছে।) [অনুরূপ: স্কুল-পালানো ছাত্র, ছেলে-ভুলানো ছড়া, কুড়িয়ে-পাওয়া মানিক, পিছিয়ে-পড়া জাতি, পথের-মোড়ে-দাঁড়িয়ে-থাকা গাড়ি, সদ্য-ঘুম-থেকে-ওঠা শিশু। আরও কিছু শব্দ, যেখানে হাইফেন আছে: হাসি-হাসি মুখ, কান্না-কান্না ভাব, চোখে-চোখে রেখো, বলে-বলে হয়রান, দেনা-পাওনা, গরু-ছাগল, হিন্দু-মুসলিম, প্রেম-প্রেম ভাব, নরম-নরম মাটি, যে-যে এসেছে, যার-যার দরকার, অতি-আধুনিক, ভর্তি-ইচ্ছুক, প্রতি-আক্রমণ]
এমন-কেউ নেই, যে ব্যাপারটা জানে না। (এমন কেউ নেই, যে ব্যাপারটা জানে না।) [অনুরূপ: যে-কেউ, যা-কিছু, তেমন-কিছু, যেমন-তেমন, যে-কেউ, যে-কথা ইত্যাদি।]
দুই- বা তিনজন সেখানে এসেছিল। (দুই বা তিনজন সেখানে এসেছিল।) [অনুরূপ: একই নাম- বা ঠিকানাবিশিষ্ট, কথাটি নিয়ম- বা রীতিসিদ্ধ ইত্যাদি। এই লেখার শুরুতে এই ব্যাপারটি নিয়ে আরও কথা বলেছি।]


নামের পর ‘-র/-এর’, ‘-তে/-য়/-এ’ যুক্ত হয় যেভাবে:
তুমি ফেসবুকের মলাট-এর কথা শুনেছ? (তুমি ফেসবুকের মলাটের/মলাট’য়ের/মলাট-য়ের কথা শুনেছ?)
আমার জন্য ‘ছবির দেশে, কবিতার দেশে’-র/‘ছবির দেশে, কবিতার দেশে’র এক কপি পাঠিয়ে দিন। (আমার জন্য ‘ছবির দেশে, কবিতার দেশে’-এর/‘ছবির দেশে, কবিতার দেশে’য়ের/ছবির দেশে, কবিতার দেশের এক কপি পাঠিয়ে দিন।) [স্বরান্ত বলেই ‘-এর’ নয়, ‘-র’ বসবে।]
তুমি গল্পগুচ্ছ-এ/গল্পগুচ্ছ-তে/গল্পগুচ্ছ’তে এ-গল্পটা পাবে। (তুমি গল্পগুচ্ছ’এ/গল্পগুচ্ছ’য়ে এ-গল্পটা পাবে।)
সত্যজিৎ ‘চারুলতা’য় রবীন্দ্রনাথের গল্পটি থেকে যতটুকু বিচ্যুত হয়েছেন, সেটার দরকার ছিল। (সত্যজিৎ ‘চারুলতা’-এ/‘চারুলতা’-তে/চারুলতা’য় রবীন্দ্রনাথের গল্পটি থেকে যতটুকু বিচ্যুত হয়েছেন, সেটার দরকার ছিল।)
‘বেলাশেষে’র শেষ দৃশ্যের কথা মনে আছে? (বেলা শেষের/‘বেলা শেষে’র শেষ দৃশ্যের কথা মনে আছে?) [মুভিটির নাম যেভাবে লেখা, সেভাবেই লিখতে হবে।]
আগামীকাল দুর্নীতি দমন কমিশন-এর/দুদক-এর একটা অনুষ্ঠান আছে। (আগামীকাল দুর্নীতি দমন কমিশনের/দুদকের একটা অনুষ্ঠান আছে।) [কোনও প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ‘-এ/-এর’ যুক্ত হলে হাইফেন দিয়ে লিখতে হবে।]


ধনদৌলত কারও চিরকাল থাকে না। (ধন-দৌলত কারও চিরকাল থাকে না।) [অনুরূপ: রাজাবাদশা, খাওয়াদাওয়া, কাগজপত্র, বাসনকোসন ইত্যাদি। এ-ধরনের দ্বৈতশব্দে দুই শব্দই একই অর্থ প্রকাশ করে।]
মনে প্রশ্ন জাগে: সে কি আমায় সত্যিই ভালোবেসেছিল? আরও সহজেই বলি: তার সবটাই কি ছিল অভিনয়? তবে কেন এতটা ঘনিষ্ঠ হলো সে? (মনে প্রশ্ন জাগে, সে কি আমায় সত্যিই ভালোবেসেছিল? আরও সহজেই বলি, তার সবটাই কি ছিল অভিনয়? তবে কেনো এতোটা ঘনিষ্ট হল সে?)
এখন বিকেল ৫:৩০/৫.৩০ মি.। (এখন বিকেল ৫-৩০ মি.।)
সে অনেক কষ্ট ক’রে অফিসের কাজ শেষ করে। (সে অনেক কষ্ট করে অফিসের কাজ শেষ করে।) কাজটা শেষ করে যেয়ো। (কাজটা শেষ ক’রে যেয়ো।) [আধুনিক নিয়মে ইলেকচিহ্নের ব্যবহার প্রায় উঠেই গেছে, তবে একই বাক্যে একই ক্রিয়াপদ একটি সমাপিকা, অন্যটি অসমাপিকা অর্থ-প্রকাশক হলে অসমাপিকাক্রিয়ার আগে ইলেকচিহ্নটি রাখতে হবে।]
তাকে শেষ দেখেছি ’১৩ সালে। (তাকে শেষ দেখেছি ১৩ সালে।) ’৯৯-এর শীতে আমি রংপুরে ছিলাম। (৯৯ এর শীতে আমি রংপুরে ছিলাম।)
ওরা দুজন/দু-জন এসেছিল। (ওরা দু’জন এসেছিল।) নটার গাড়ি কটায় ছাড়ে? (ন’টার গাড়ি ক’টায় ছাড়ে?) [সংখ্যার সংক্ষিপ্তরূপের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বকমার ব্যবহার উঠে গেছে। একান্ত যদি দিতেই হয়, একটা হাইফেন দেওয়া যায় সংক্ষিপ্তরূপটির পর। যেমন নবার/ন-বার, ছশো/ছ-শো, দুমাস/দু-মাস ইত্যাদি।]


উদ্ধৃতিচিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম: একাধিক অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করার ক্ষেত্রে প্রথম অনুচ্ছেদের শুরুতে (‘) থাকবে, শেষে কিছু থাকবে না। দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের শুরুতে আবার (‘) থাকবে, আর কোনও অনুচ্ছেদ না থাকলে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের শেষে (’) থাকবে।


সে বলল, “আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাই বলছে, ‘তোমরা কেন এসেছ?’।”
সে বলল, ‘আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাই বলছে, “তোমরা কেন এসেছ?”।’
সে বলল, ‘আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাই বলছে, “আমি আজ কোথাও যাব না।”।’
উপরের উদাহরণগুলি খেয়াল করলে উদ্ধৃতিচিহ্নের ভেতরে উদ্ধৃতিচিহ্ন কীভাবে বসে, শেখা যাবে।


গরীয়সী, পটীয়সী, মহীয়সী, সমীচীন, হরীতকী---এ বানানগুলি অনেক সময় ভুল হয়। [‘অনেকসময়’ নয়। ‘অনেক’-এর পর গ্যাপ দিতে হবে।]


তাদের মধ্যেই সে জ্ঞান (বোধ?) ছিল না। [অধিকতর উপযুক্ত শব্দ বা শুদ্ধ শব্দটিকে প্রথম বন্ধনীর ভেতর প্রশ্নবোধক চিহ্ন সহযোগে লেখা হয়।]
তিনি পরিশ্রমী, সৎ এবং, আমার বিবেচনায়, কর্মঠ। (তিনি পরিশ্রমী, সৎ এবং আমার বিবেচনায় কর্মঠ।)
কখনওবা,/কখনও-বা, আমার যতটা মনে হয়েছে, উনি ওরকম কথাও বলেছেন। (কখনওবা আমার যতটা মনে হয়েছে, উনি ওরকম কথাও বলেছেন।)
মি. সেন তাঁর নামের আগে ড. বসান না। (মিঃ/মি সেন তাঁর নামের আগে ড/ডঃ বসান না।)
আমি জানি, আপনি রাজি, তবু…। (আমি জানি, আপনি রাজি, তবু………) সে তো আমার কাছেই এসেছিল,…তোমার কাছে নয়। (সে তো আমার কাছেই এসেছিল………তোমার কাছে নয়।) [বিন্দু হবে তিনটি, এর বেশি নয়। যদি এ ত্রিবিন্দুর আগে বা পরে কোনও উদ্ধৃতিচিহ্ন বা অন্য কোনও যতিচিহ্ন থাকে, তবে তা যথাস্থানে বসে যাবে।]


অষ্টাদশ শতকে ওরা এখানে এসেছিল। (১৮ শতকে ওরা এখানে এসেছিল।)
আজকের তারিখ ৩/১২/২০১৯। আজকের তারিখ ৩.১২.২০১৯। আজকের তারিখ ৩/১২/১৯। আজকের তারিখ ৩.১২.১৯। (আজকের তারিখ ০৩-১২-১৯। আজকের তারিখ ০৩-১২-’১৯।) [তারিখের দিন, মাস, বছর-এর মাঝে oblique বা dot বসবে, hyphen নয়। বছর বা সাল সংক্ষিপ্ত করে শুধু শেষের দুই ডিজিট লিখলেও তার আগে ঊর্ধ্বকমা দিতে হবে না।]
কি কাজে কি অকাজে তার দক্ষতা মেলা ভার! (কী কাজে, কী অকাজে, তার দক্ষতা মেলা ভার!)
পাতে টক দই দাও। (পাতে টক দৈ দাও।) [অনুরূপ: কই, বউ, খই, দই, থই থই, অথই, হইচই লিখব, কৈ, খৈ, বৌ, দৈ, থৈ থৈ, অথৈ, হৈচৈ লিখব না। তবে ‘মউ’ না লিখে ‘মৌ’ লিখব।]
পুকুরটা জলে টইটম্বুর যেন! (পুকুরটা জলে টইটুম্বুর/টুইটুম্বুর/টুইটুম্বর যেন!)


কিছু শব্দের শেষে ও-কার---দেবো, কি দেবো না?
কালো মেয়ে ভালো হয় না, এমন মত তোমার মতো গাধারই থাকে। ‘হল’ অর্থ লাঙল, এটা তোমার জানা হলো। (কাল মেয়ে ভাল হয় না, এমন মত তোমার মত গাধারই থাকে। ‘হল’ অর্থ লাঙ্গল, এটা তোমার জানা হল।) [কাল, ভাল, মত, হত, হল, জান, খাট (মানুষ), দেব, চেন, রব ইত্যাদি শব্দের শেষে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ও-কার দিলেই ভালো। কেন? কারণ এ শব্দগুলির ভিন্ন অর্থও আছে। কাল মানে গতকাল, ভাল মানে কপাল, মত মানে অভিমত, হত মানে নিহত, হল মানে লাঙল, জান মানে প্রাণ, খাট মানে শোয়ার জায়গাবিশেষ, দেব মানে দেবতা, চেন মানে গলার চেন, রব মানে প্রতিপালক। এককথায়, যদি শেষে ও-কার না দিলে অন্য অর্থ-প্রকাশক কোনও শব্দ মাথায় চলে আসে, তবে ও-কারটা দেবো।]


সেভাবে করে ভেবে দেখিনি। (সে ভাবে করে ভেবে দেখিনি।) [-ভাবে, -কাল, -সব আলাদা করে লিখব না। যেমন একাল, সেকাল, যেভাবে, এভাবে, এসব, সেসব, যেসব ইত্যাদি।]
সব শ্রোতাই চলে এসেছেন। শ্রোতাদের বসতে বলুন। একটু কষ্ট করে ফুলগুলো টেবিলে রাখুন। (সব শ্রোতারাই চলে এসেছেন। শ্রোতাদেরকে বসতে বলুন। একটু কষ্ট করে ফুলগুলোকে টেবিলে রাখুন।)
হয়তো সে খেয়াল করেনি, নয়তো এভাবে বলত না। (হয়ত সে খেয়াল করেনি, নয়ত এভাবে বলত না।)
হাজার-হাজার/হাজারো নয়, সেখানে লাখ-লাখ/লাখো মানুষের ভিড়! (হাজারো-হাজারো নয়, লাখো-লাখো মানুষের ভিড়!)
উনি গ্রিসে থাকেন, গ্রিনল্যান্ডে নয়। (উনি গ্রীসে থাকেন, গ্রীণল্যান্ডে নয়।) [বিদেশি শব্দে দীর্ঘ ঈকার অনাবশ্যক। ব্যতিক্রম: চীন, কাশ্মীর।]


সেই আমি আর এই আমি’তে অনেক তফাত। (সেই আমি আর এই আমি’তে অনেক তফাৎ।) [অনুরূপ: বহুত (বহুৎ নয়), উচিত (উচিৎ নয়), ইত্যাদি। তবে তৎসম শব্দের খণ্ড-ত অবিকৃত থাকবে, খণ্ড-ত শেষে আছে এমন প্রত্যয়সাধিত শব্দের খণ্ড-ত ‘ত’ হয়ে যাবে না। যেমন বিদ্যুৎ, জগৎ, হঠাৎ, তড়িৎ, তৎক্ষণাৎ, তাবৎ, পশ্চাৎ, শরৎ, হৃৎ (হৃৎপিণ্ড), অভিজিৎ, সত্যজিৎ, মহৎ, ক্বচিৎ, কিঞ্চিৎ ইত্যাদি। তবে এসব শব্দের পর ‘এ’ বা ‘এর’ বসলে ‘ৎ’ বদলে ‘ত’ হয়ে যায়। যেমন ভবিষ্যতে, সত্যজিতের, বিদ্যুতের ইত্যাদি।]


আমার জুতোজোড়া পাশের রুম থেকে নিয়ে আসবে? (আমার জুতো দুটি/জুতো দুটো/জুতো জোড়া পাশের রুম থেকে নিয়ে আসবে?)


উপকমিশনার হতে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে একটা টিম গঠন করা হলো। (উপ কমিশনার হতে তদুর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে একটা টিম গঠন করা হল।) [উপ, সহ-এর পরের শব্দ একত্রে বসবে, যুগ্ম-এর পরের শব্দ আলাদা বসবে। যেমন উপসম্পাদক, সহসভাপতি, যুগ্ম সচিব ইত্যাদি। একইসাথে তদূর্ধ্ব, অনূর্ধ্ব বানান দুটি লক্ষণীয়।]
জেলাপ্রশাসক ওখানে উপস্থিত ছিলেন। (জেলা প্রশাসক ওখানে উপস্থিত ছিলেন।) [সমাসবদ্ধ শব্দসমূহ একসাথে বসে।]
ওখানে লন্ঠন-হাতে কে দাঁড়িয়ে? (ওখানে লণ্ঠন-হাতে কে দাঁড়িয়ে?)
কিবোর্ডে চন্দ্রবিন্দু কী করে দিতে হয়? (কী-বোর্ডে চন্দ্রবিন্দু কী করে দিতে হয়?)
আমরা সবাই গুণীজন-সংবর্ধনায় গিয়েছিলাম। (আমরা সবাই গুণিজন সম্বর্ধনায় গিয়েছিলাম।) [সংবিৎ (সম্বিৎ নয়), সংবরণ (সম্বরণ নয়), স্বয়ংবর (স্বয়ম্বর নয়), সংবেদন (সম্বেদন নয়), সংবলিত (সম্বলিত নয়)]


আঙুলের ফাঁকে যেন গোটা এক আঙিনা ধরে! (আঙ্গুলের ফাঁকে যেন গোটা এক আঙ্গিনা ধরে!) [অনুরূপ: আঙুর, কাঙাল, কামরাঙা, ক্যাঙারু, গোঙানি, ঘুঙুর, টাঙানো, ডাঙা, ডিঙিনৌকা, ঢেঙা, ঢ্যাঙা, নোঙর, ভাঙা, ভেঙে, মাছরাঙা, রাঙা, রঙিন, লাঙল, হাঙর ইত্যাদি।]


মুখস্থবিদ্যার জোরে সে আমায় পরাস্ত করল। (মুখস্তবিদ্যার জোরে সে আমায় পরাস্থ করল।) [-স্ত না -স্থ? মনে রাখার উপায়: যদি ওটা বাদ দিলে অর্থবোধক শব্দ পাওয়া যায়, তবে হবে -স্থ, যেমন মুখস্থ, কণ্ঠস্থ, আত্মস্থ, গৃহস্থ, সমাধিস্থ ইত্যাদি। আর অর্থবোধক শব্দ পাওয়া না গেলে হবে -স্ত, যেমন অভ্যস্ত, -গ্রস্ত, ন্যস্ত, ব্যস্ত, পরাস্ত ইত্যাদি।]


যে নাটকটি মঞ্চায়ন করা হলো, তা ছিল শিল্পায়ন ও নগরায়ণের উপর। (যে নাটকটি মঞ্চায়ণ করা হলো, তা ছিল শিল্পায়ন ও নগরায়নের উপর।) [অনুরূপ: মূল্যায়ন, বাস্তবায়ন, বিশ্বায়ন, বিদ্যুতায়ন, প্রত্যয়ন, আশ্রয়ণ, গৃহায়ণ, চিত্রায়ণ, বৃক্ষায়ণ, অতিথিপরায়ণ [-পরায়ণ, -পরায়ন নয়], উত্তরায়ণ, শহরায়ণ, অগ্রায়ণ, রবীন্দ্রায়ণ, চান্দ্রায়ণ ইত্যাদি। র বা র-ফলার পর -অয়ন থাকলে মূর্ধন্য-ণ হবে।]
ঝরনার জলটা ছিল মিষ্টি। (ঝর্নার/ঝর্ণার জলটা ছিল মিষ্টি।) এ কী ধরনের/কেমনতর আচরণ তোমার! (এ কী ধরণের/কেমনতরো আচরণ তোমার!) [ধরনা, ধর্না/ধর্ণা নয়। ধরন, ধরণ নয়।]


কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে ভালো বকশিশ পাবে। (কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে ভালো বকশিস/বকসিস পাবে।) রসিদটা বুঝে নিন। (রশিদটা বুঝে নিন।) [অনুরূপ: নকশা (নকসা নয়), ফরমাশ (ফরমাস নয়), শাগরেদ (সাগরেদ নয়), শৌখিন (সৌখিন নয়), পুলিশ (পুলিস নয়), আধুনিক নিয়মে ‘শরবত’/পুরাতন নিয়মে ‘শরবৎ’ (সরবত নয়), শেক্‌স্‌পিয়ার (আধুনিক নিয়মে)/শেকস্পিয়র (পুরাতন নিয়মে), শার্ট (সার্ট নয়), ক্লাস (ক্লাশ নয়), ক্রসচিহ্ন (ক্রশচিহ্ন নয়), পেনসিল (পেন্সিল নয়) [বিদেশি শব্দ ভেঙে লিখলে উচ্চারণে সমস্যা না-হলে ভেঙেই লেখা সংগত। শব্দের আদিতে ও শেষে যুক্তাক্ষর রূপে ও শব্দের মাঝখানে ভেঙে লেখা যায়।], তক্তাপোশ (তক্তাপোষ নয়), শখ (সখ নয়), মাসুল (মাশুল নয়), মজলিশ (মজলিস নয়), নোটিশ (নোটিস নয়)। শব্দের মূল বানানে -sh থাকলে ‘শ’ হবে, ‘স’ নয়। ইংরেজিতে me- থাকলে বাংলায় লিখতে হবে ‘মে-’, ‘ম্যা-’ নয়। ‘মেসেঞ্জার’ শুদ্ধ, ম্যাসেঞ্জার/ম্যাসাঞ্জার নয় (messenger)। অনুরূপ: মেসেজ (message)। তবে ma- থাকলে ‘ম্যা-’ উচ্চারণটি হতে পারে। ‘ম্যাসাজ’ শুদ্ধ, মেসেজ/মেসাজ নয় (massage)।]


তুমি সবে ক্লাস সিক্সে, ইলেকট্রনিকস নিয়ে কী জানো! (তুমি সবেমাত্র ক্লাশ সিক্‌সে, ইলেকট্রনিক্স নিয়ে কী জানো!) [ইংরেজি শব্দের শেষে -cs থাকলে বাংলায় প্রতিবর্ণীকরণের ক্ষেত্রে বসবে -কস (-কস্‌ নয়, কেননা বিদেশি শব্দের বাংলায় প্রতিবর্ণীকরণের ক্ষেত্রে হসন্ত-চিহ্ন ব্যবহার করতে হয় না। যেমন কাস্টমস, এস্টাব্লিশড, শিট ইত্যাদি।), -x থাকলে বসবে ক্স। ইউনেস্কো নয়, ইউনেসকো। ইঞ্জেকশন নয়, ইনজেকশন। ইলেক্ট্রিক নয়, ইলেকট্রিক। এক্সরে নয়, এক্স-রে। সবে, শুধু, কেবল শব্দগুলির পর ‘-মাত্র’ বসবে না।]
আমি সেখানে গিয়েছিলাম অফিশিয়াল কাজে। (আমি সেখানে গিয়েছিলাম অফিসিয়াল কাজে।) [ইংরেজি শব্দে -ci_ থাকলে ‘স’ না হয়ে ‘শ’ হবে। যেমন কমার্শিয়াল, ইলেক্ট্রিশিয়ান ইত্যাদি।]


বাংলা একাডেমি আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান। (বাংলা একাডেমী আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান।) [কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাঁর/তাঁদের নামের বানান যেভাবে লিখেন, ঠিক সেভাবেই লিখতে হবে। যেমন শামসুর রাহমান (রহমান নয়), হুমায়ূন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন ফরীদি, শিল্পকলা একাডেমি (একাডেমী নয়), আওয়ামী লীগ (লিগ নয়), সাহিত্য আকাদেমি (একাডেমী/একাডেমি/অ্যাকাডেমি নয়) ইত্যাদি।]


ওদের অনুদানের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে সাত টাকা, ১০ টাকা, ৫৮ টাকা, এক/১ হাজার টাকা, ৭/সাত লাখ ৬/ছয় হাজার ৫১৯/পাঁচশো-উনিশ টাকা। (ওদের অনুদানের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭ টাকা, দশ টাকা, আটান্ন টাকা, ১ হাজার টাকা, সাত লাখ ৬ হাজার পাঁচশো-উনিশ টাকা।) [সংখ্যাটি এক থেকে নয়-এর মধ্যে হলে কথায়, ১০ থেকে ৯৯৯-এর মধ্যে হলে অঙ্কে, এর উপরে হলে কথায় বা অঙ্কে (যে-কোনও একটি) লেখা হবে।]


সে ভোরে ওঠে। পাখি ওড়ে। (সে ভোরে উঠে। পাখি উড়ে।) সে ভোরে উঠে পড়তে বসে। পাখিটা উড়ে গেল। (সে ভোরে ওঠে পড়তে বসে। পাখিটা ওড়ে গেল।)
দমকলবাহিনি আগুন লাগার কতক্ষণ পর পৌঁছায়? (দমকলবাহিনি আগুন লাগার কতক্ষণ পর পৌঁছে?) [সমাপিকা ক্রিয়ায় পৌঁছায়/পৌঁছয়, পৌঁছে নয়।]
যত্রতত্র/যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলবেন না। (যত্র-তত্র/যেখানেসেখানে ময়লা ফেলবেন না।)


উল্লিখিত শর্তগুলি মেনে চোলো। (উল্লেখিত শর্তগুলি মেনে চল।) [প্রাসঙ্গিক: ইতিপূর্বে (ইতোপূর্বে/ইতঃপূর্বে নয়), ইতোমধ্যে (ইতিমধ্যে নয়)]


সবাই এক রকম হয় না। (সবাই একরকম হয় না।)
কিন্তু…কাজটা গুছিয়ে এনেছি একরকম। [‘প্রায়’ অর্থে] (কাজটা গুছিয়ে এনেছি এক রকম।) এই তো ভাই, আছি একরকম! [‘কোনওরকম’ অর্থে] (এই তো ভাই, আছি এক রকম!)
একধরনের ক্রোধ থেকে সে এ-কথা বলেছে। [kind of অর্থে] (এক ধরনের ক্রোধ থেকে সে এ-কথা বলেছে।) সবাই কি আর এক ধরনের হয়? [similar অর্থে] (সবাই কি আর একধরনের হয়?)


তোমাকে অনেক বড়ো হতে হবে। (তোমাকে অনেক বড় হতে হবে।)
তিনি দেশের কৃতী সন্তান, তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর কৃতির মধ্য দিয়ে। (তিনি দেশের কৃতি সন্তান, তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর কৃতীর মধ্য দিয়ে।)


(চলবে…)