স্বর্গ হতে বিতাড়িত হবার পর


১. নারীরা সবসময়ই দাবি করেন, পুরুষেরা তাঁদের কেন আরও একটু বোঝেন না, আরও একটু ভালোবাসেন না! অথচ নারীরা নিজেরাই পুরুষদের বোঝার বেলায় প্রায় সবসময়ই নিরাসক্ত থাকেন।


২. একজন পুরুষকে সবচেয়ে ভালো বোঝা যায় দুই সময়ে: অন্ধকারে ও বিছানায়।


৩. প্রেমিকপুরুষ আর ‘প্রেমিক যখন বর’ সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি সত্তা। সেজন্যই প্রেমিককে বিয়ে করার পরমুহূর্ত থেকেই একজন নারী তার ‘বর’টিকে চিনতে পারে না। বিয়ের পরের মানুষ ও বিয়ের আগের মানুষ, প্রায় সময়ই, সম্পূর্ণ দুইটি ভিন্ন মানুষ।


৪. পুরুষালি গঠন কিংবা ওই ধরনের আচরণ-করা কোনও মেয়েকে ছেলেরা সাধারণত পছন্দই করে না। একইভাবে, মেয়েলি গঠন কিংবা ওই ধরনের আচরণ-করা কোনও ছেলেকে মেয়েরা সাধারণত পছন্দই করে না। অনেকসময়ই, এমন মানুষের মধ্যে সমপ্রেম-প্রবৃত্তি দেখা যায়।


৫. পুরুষমানুষকে রূপ দিয়ে ধরা যায়, এটা ঠিক কথা। কিন্তু একজন পুরুষকে সারাজীবনই শুধু রূপ দিয়ে ধরে রাখা অসম্ভব। একজন নারী যতই রূপসী হোন না কেন, তিনি যদি তাঁর সঙ্গীর উপর সবসময়ই কর্তৃত্ব খাটাতে চান, তবে তাঁর সে রূপের প্রতি সঙ্গীর বিতৃষ্ণা জন্মাতে বেশি সময় লাগে না।


৬. এ যুগে দাঁড়িয়েও অনেক পুরুষই এখনও নারীর ‘মগজ’কে ভয় করে। ওদের বলতে ইচ্ছে করে, ভাই রে, মগজ জিনিসটা উপরওয়ালা মানুষ অনুযায়ী দিয়েছেন, জেন্ডার অনুযায়ী না। এই মগজ জিনিসটার কোনও জেন্ডারই তো হয় না!


৭. একজন ব্যবসায়ী পুরুষ আর একজন চাকরিজীবী পুরুষের চেহারার বাহ্যিকতাতেই একধরনের তফাত থাকে। একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ একদেখায়ই একজন পুরুষের পেশা সম্পর্কে বলে দিতে পারেন। এখানে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলে রাখি, ব্যবসা হচ্ছে শিল্প, আর চাকরি হচ্ছে দায়।


৮. একজন বেকার পুরুষ তার যেই প্রেমিকাটিকে অফুরন্ত অবসরের সবটুকু সময় দেয়, সেই প্রেমিকাও শেষমেশ বেকার কেউই হয়। বেকারত্বের প্রথম ও শেষ সান্ত্বনাই প্রেম। প্রেমের ব্যাপারে অতিআবেগপ্রবণ মানুষ সাধারণত খুব বেশি সফল হতে পারেন না।


৯. একজন ব্যক্তিত্ববান পুরুষ কখনওই কোনও প্রিয়জনের চাপে পড়ে নিজের মূললক্ষ্য, জীবনদর্শন এবং চরিত্র থেকে সরে আসেন না, প্রয়োজনে সেই প্রিয়জনের কাছ থেকেই সরে আসেন। মেয়েরা তার প্রিয় মানুষটিকে বদলাতে চায় এবং তার ফলে, প্রায়ই, শেষমেশ তাকে হারিয়ে ফেলে।


১০. একজন পুরুষ যখন মেয়ের বাবা হন, তখন তিনি নীতিগত দিক থেকে আপনাআপনিই পালটে যেতে শুরু করেন, তার ভেতরকার উপলব্ধি ও বিশ্বাসগুলিও পালটাতে থাকে প্রতিনিয়ত। একজন মেয়ের পিতার স্বর ও একজন ছেলের পিতার স্বর দুই রকমের।


১১. সেই পুরুষটিই সবচেয়ে দুঃখী, যার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একজন নারীও, যেমন মা, বোন, প্রেমিকা, স্ত্রী, কন্যা, তাঁর প্যাশনকে গুরুত্ব দেয় না, এমনকি ওটাকে কোনও কাজই মনে করে না। এ ধরনের পুরুষরা বাইরে থেকে ঘরে ফেরার তাড়া অনুভব করে অপেক্ষাকৃত কম।


১২. একজন সৎ পুরুষমানুষকে জীবনে যে পরিমাণ লাথি খেয়ে বাঁচতে হয়, সেটা অনেক কল্পনাবিলাসী নারী কষ্টকল্পনাতেও আনতে পারবেন না।


১৩. পুরুষদের নিয়ে যেসব ফালতু প্রবাদবাক্য প্রচলিত আছে, সেগুলির মধ্যে প্রধানটি হচ্ছে---পুরুষমানুষ কখনও কাঁদে না। একজন পুরুষকে দুইটা সময়ে প্রতিনিয়তই কাঁদতে হয়: যখন তার জীবনে কোনও নারী থাকে না এবং যখন তার জীবনে কোনও নারী থাকে।


১৪. আপনার পরিচিত, পাড়ার সবচেয়ে বেশি গীবতকারী চাচাটিকে একই পাড়ার সবচেয়ে কম গীবতকারী কোনও মহিলার সাথে তুলনা করে দেখবেন, আপনার সেই চাচা কোনওভাবেই প্রথম হতে পারবেন না। এই ব্যাপারে আপনি মোটামুটি নিশ্চিত থাকতে পারেন। বিশ্বাস হলো না? ওকে, ডু ইট!


১৫. আমরা সবাই নারীদের হিংসুটে রূপটি সম্পর্কেই জানি, আর ওটা নিয়েই হাসাহাসি করি। তবে আমরা যা জানি না, তা হলো, পুরুষেরা সত্যিই নারীদের তুলনায় অনেক বেশিই হিংসুটে। নারীরা চেহারায় অথবা ছোট্ট কোনও আচরণের মাধ্যমে হুট করেই হিংসাটা প্রকাশ করে ফেলে, আর পুরুষেরা হিংসা জিনিসটাকে কৌশলে লুকিয়ে ফেলে। পুরুষের মনের মধ্যেও বিরাট কিছু হিংসা খেলা করে, যেগুলো ওরা অবশেষে কিছু ভয়ংকর বা ধ্বংসাত্মক কাজ দিয়ে বোঝায়, ওগুলো প্রথম দিকে আপনি চট করে ধরতেই পারবেন না।


১৬. একজন মহাপুরুষের বেলায় তিনটা ঘটনা ঘটে। ক) তিনি জীবনে বিয়েই করেন না। খ) বিয়ে না করলে তিনি তাঁর প্রেমিকাকে/প্রেমিকাদের, কিংবা বিয়ে করলে তিনি তাঁর স্ত্রীকে/স্ত্রীদের…সুখী করতে পারেন না। জীবনে সুখী হতে চাইলে কখনওই কোনও মহাপুরুষের সাথে প্রেম করা যাবে না, কিংবা ওরকম কাউকে বিয়ে করা যাবে না। গ) একজন নারীই তাঁকে মহাপুরুষ বানান---তাঁর জীবনে থেকে গিয়ে, কিংবা তাঁর জীবন থেকে চলে গিয়ে। ওই নারীর দেখা পাওয়ার আগ পর্যন্ত ওই পুরুষ নিজেই নিজেকে চিনতে পারেন না, মহাপুরুষ হওয়া তো অনেক পরের কথা!