স্বেচ্ছাগোপন ইচ্ছেমতন

 তোমার যে আমার সবটাই জানা,
তুমি তো আমার বুঝেছ সবই…
আমি কাব্যে থাকি, কাব্যে বাঁচি,
আমার তবু কাব্য হওয়াই মানা!
আমার এ দুটো ঠোঁট বাতাসে কাঁপে,
সাথে মুঠোয়-ভরা স্বপ্ন ধেয়ে আসে।
যখন কিছু হারিয়ে ফেলাই নিয়ম,
ভিজে যায় শুধু ব্যস্ত মায়ার বাঁধন।
খোঁজে বোকাসুর অচেনা আন্তর্জালে,
ওতে শব্দ কিছু ছায়াতেই যায় বুনে,
বদলায় হায় আবেগ ক্ষণে-ক্ষণে!
 
কোথায় গেলে আমি সেই ‘তুমি’টা পাব?
বলবে কি কেউ…আমি সেখানটাতেই যাব।
চুপটি করে একটুখানি বসবে আমার পাশে?
সুখ যে আমার তোমারই কথার পালকি বয়ে আসে!
সত্যি বলছি, যদি না বাস ভালো, আহ্লাদে আর আদরে না রাখ,
বুকে নেওয়ার রোজ-নিয়মের হেরফেরটা কর,
তা হলে চুপটি করে মুখ ফুলিয়ে হাত পা ছেড়ে বসে থাকব ঠায় এখানে!
লিখব না আর চিঠি, বলবই না তো কথা,
শুনবই না অজুহাত কোনও, পাই না যতই ব্যথা!
 
খুব দেখি সখ নিজেই একা ভালোবাসা আর আদর নেওয়ার…যাও না তো বেশ
একাই নাহয় করো ভালো খুব বাসাবাসি।
খুব যে দারুণ শিখেছ ফাঁকি,
কথা না-বলার বাহানা যত…সে তো বাপু আমিও বুঝি!
ভাবছ তো খুব…মেয়ের কী চোট,
কথার ঝাঁজ, সাহস বেজায়…আমার ওপর উল্টো সে ভার!
থাকবেই তো সে, দেখো না নিজেই…ভুলটা কার!
ফের যদি আদরে না রাখ,
ইচ্ছে করে কাজের ছুতোয় সময় না দাও,
এদিক সেদিক কাজের চাপে ভুলেই থাক দিব্যি বেশ,
আমিও তবে…কথা না-বলে, কথা না-শুনে গাল ফোলাব, কিছু না-খেয়েই থাকব বসে…
ফোন করলে ধরবই না তো,
চিঠিলেখাটাও থেমেই যাবে,
ভালোবাসি বলে জ্বালাব না আর,
কাছে এসো, কাছে টানো…এমন পাগলামো সব চলেই যাবে!
 
ভেবেছ না খুব…আদরটাদর করবে না আর!
আমি যেন হদ্দ বোকার, পারি না কিছুই করতে আদায়!
আদরটা নেয় কীভাবে, সেও আমি ঢের শিখেছি তোমারই কাছে!
আদর যদি না কর তবে করব আদায় আদর দ্বিগুণ!
না-নিয়ে বুকে যাবেটা কই, বেড়ালছানা?
ভালো না বাসা অতই সোজা!
সবার জন্য সময় আছে, সব কিছুরই সময় আছে,
আমার জন্য সময়টা কই?
আমার ভাগটা কখন দেবে?
আমি অন্যেরটার ভাগ চাই না, ওতে আমার এসে যায় না কিছুই,
আমার ভাগের ভালোবাসা ঠিক যদি দাও নিয়ম করে প্রতিদিনই,
যুদ্ধ আমি করবই না আর! আর কাউকে সময় দিলেও বসাব না ভাগ!
 
ভাবতেই পার, বেশ তা হলে না দিয়ে দেখি কী করে সে!
তা হলে আমিও চুপটি করে হাত পা ছেড়ে বসে থাকব।
আদর চেয়ে হব না পাগল,
ভালোবাসি-ও বলব না আর,
চিঠি…সে তো লিখবই না কখনও ভুলেও!
ভালোবাসার যত্ন নেবে না, আদর দেবে না, ফেলে রাখবে অবহেলাতেই,
তখন গাল ফোলালে বলবে এসে, আলতো হেসে: তুমি তো খুব লক্ষ্মী পাখি!
ভাবখানা তার এমন যেন তার অপরাধ নেই তো কোনও!
তোমার সাথে থেকে থেকে চালাকি এসব শিখেছি ভালোই!
করবে আদর, থাকব ভালো, রাখব ভালো…
চলবে সবই খুব স্বাভাবিক…এই তো জানি!
আর যদি হেলাই কর, রাখ অনাদরে, না টান বুকে একটু করেও,
তা হলে তো বেশ…আমিও জানি ওসব নিয়ম, যে-সব নিয়ম টলাবে তোমায়!
 
আচ্ছা, এত কিপ্টে কেন ভালোবাসাটা দেওয়ার বেলায়?
তোমার কি ভালোবাসার অভাব ভারি?
রোজই যখন ঘুম ভাঙতেই তোমার অমন মুখটা দেখি,
মনে হয় যেন যাচ্ছি হারিয়ে দূরে কোথাও…
ভাবি, কী যে ভীষণ সুখেই না আছি, নিজের মতন!
মাঝেমাঝে মনে চলে আসে এও…
তুমি কি সত্যি তুমিই, যাকে ভালোবাসি আমি?
আমার এত সৌভাগ্যটা এল কোথা থেকে তোমায় পাওয়ার?
তোমার ভালোবাসা পাই…এত সুখ কেন আমারই কপালে?
 
কখনও তোমার ভালোবাসাটা আমার কাছে অধিকারই যেন…
অন্যতম বেসিক নিড, না হলে যা চলছে না আর!
বলো তো দেখি, লিখব যাকে, তারই উপর অভিমান করে লেখা যায় কি?
তোমার ওপর রাগ অভিমান কিছুই যে আর কাজ করে না…
কিন্তু তোমার অবহেলাটা পারি না নিতে একেবারেই!
তখন আর লিখি না কিছুই, বলি না কিছুই…চুপটি করে লুকিয়ে থাকি!
একে তুমি কী বলবে? রাইটার্স ব্লক? না কি স্বেচ্ছাগোপন ইচ্ছেমতন?