হাসে কেবল সত্য

 
মৃত্যু ধর্ম বোঝে না,
মৃত্যু পবিত্রগ্রন্থ বোঝে না,
মৃত্যু কেবলই মানুষ বোঝে।


মৃত্যু আস্তিক চেনে না,
মৃত্যু নাস্তিক চেনে না,
মৃত্যু কেবলই মানুষ চেনে।


হায়, কেবল মানুষই আজও মানুষ দেখে না।


মৃত্যু বিশ্বাসের পরোয়া করে না,
মৃত্যু অবিশ্বাসের পরোয়া করে না,
মৃত্যু কেবলই হেতুর পরোয়া করে।


মৃত্যু রাজনীতির একটিও আপ্তবাক্যকে তোয়াক্কা করে না,
মৃত্যু কোনও নেতার মিথ্যাচারকে তোয়াক্কা করে না,
মৃত্যু কেবলই হেতুর তোয়াক্কা করে।


তবু, আজও আমরা সমাসন্ন মৃত্যুর সাথে লুডু খেলে যাচ্ছি।


মৃত্যুর কোনও পছন্দের দেশ নেই।
মৃত্যুর কোনও পছন্দের জাত নেই।
মৃত্যুর কোনও পছন্দের নিয়ম নেই।
মৃত্যু কোনও পাপ বা পুণ্যের ধার ধারে না।
মৃত্যুর অসময় নেই, মৃত্যুর দুঃসময় নেই।
মৃত্যুর ব্যাকরণে, সময়-এর আগে বা পরে কিছুই বসে না।


আমাদের একধরনের উৎসব চলছে।
আমরা কেউ কেউ ব্যাখ্যায় ব্যস্ত হয়ে আছি।
আমরা কেউ কেউ তর্কে সুখী হয়ে আছি।
আমরা কেউ কেউ ইগোতে আকণ্ঠ ডুবে আছি।
আমরা কেউ কেউ হাসিঠাট্টায় মেতে আছি।


আমরা দেখছি, ওদের কী হয়।
আমরা ভাবছি, আমার কিছু হবে না।
আমরা শুনছি, ওরা মিথ্যে বলছে!


আমরা ভালো আছি, আমরা আশ্বস্ত হয়ে আছি।
একজন ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করবেন, তাই
আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি মাথায় রেখে অপেক্ষা করছি।
ওদের মরতে দেখে আমরা বলেছি, মানুষ মরছে!
…যেন আমরা মানুষই নই!
হায়, আজ এক অবোধ ব্যাধি আমাদেরও মানুষ বানিয়ে ছাড়ল!


মৃত্যু যাদের এখনও ইশারায় ডাকেনি,
তারা নিরুত্তাপ, নিরুদ্বিগ্ন হয়ে আছে।
মৃত্যু যাদের ঘরে নতুন বার্তা নিয়ে আসেনি,
তারা এখনও অন্যদের মৃত্যু নিয়ে তামাশা করে।


কিছু মৃত্যু থাকে, যা চিকিৎসকদের দেখে ভ্রূকুটি করে।
সেইসব মৃত্যুকে দেখে কিছু ধর্মব্যবসায়ী ভ্রূকুটি করে।
আমাদের আগের মৃত্যুগুলির কোনও বন্ধু ছিল না।
আমাদের আজকের মৃত্যুর এক বন্ধু বাদে আর কিছুই নেই।


আমরা যা কখনও দেখিনি,
আমরা তা কখনও ভাবি না।
এমন নির্ভার হয়েও বেঁচে তো আছি!


দিনশেষে, শেষদিনটা বড় জলদি এসে পড়বে!
সকল ভ্রূকুটি আড়ালে চলে যাবে,
সামনে পড়ে থাকবে, একটাই জ্যান্তসত্য---মৃত্যু!