হৃদয় আড়ালের পথিক

এক।
একটা ভোর—নাহয় তুমিই হলে…….কী ক্ষতি, বলো?
অস্তিত্বের ভিড়ে, অস্তিত্ব যায় ফিরে……
প্রজাপতি যত, পিছু হটে শুধু—শুঁয়োপোকার খোঁজে।
ওরা বলে, এ নাকি প্রকৃতির নির্মমতা!
আমি বলি, এ শাস্তি কেবল—প্রাপ্যটা যা!

সে আসে…….
এতদিন পর……
ওপার থেকে……
ভর করে স্রেফ নামে…….
মৃত্যু নয়, একেবারে জীবন ঘেঁষে…….
অথচ কী ভীষণ নির্দয় রয়ে……
অন্য কারো হয়ে…….
কেন যে হয় এমন! কে তা জানে!

ও যদি কাছের হত,
সরাতাম দূরে…….
আহা, ঐ এক নামেই জীবন চলে!
উপভোগ্য বড়? নাকি কেবলই কষ্টের যতন পালন?
আমি তো ভাবি, এ যন্ত্রণা নিখুঁত কেমন!

ভালোবাসা!—এ বড় কঠিন শর্ত,
এক শর্তেই জীবন ঘোরে!
এ শর্ত না এলে সব ঠিক পথে চলে, স্বাভাবিক খুবই!

সম্পর্কহীন সম্পর্কটা থাকে যতটা স্নেহেবাঁধা,
ভালোবাসাটা ভিন্ন রঙের, অন্য সুরে যত্নে সাধা,
অভিবাদনে তাই নেই কোনো বাধা!
জেনো অভিনন্দন!
তোমার তো জানি, কষ্ট বিলিয়ে রুটিরুজি হয়,
কৌশলে তুমি অজেয় তাই,
কত সহজেই কষ্টের ম্যাপ এঁকে ফেল তুমি!

দুই।
সে এক দেয়াল তুলে স্বপ্ন দ্যাখে……..
ঠেলবে দূরে, সরাবে বলে—
দূর থেকে আরো দূরতম দূরে………

সেই রুক্ষ দেয়াল বেয়ে
ক্ষত আর বিক্ষত হয়ে—
চূড়োয় উঠি
দেখতে তারেই!

দূর থেকে আসে……..
শুনেছি কানে
শুকনো পাতায়
মর্মর ধ্বনি;
সেখানেও নাকি সে থাকে মিশে!
অবোধ আমি খুঁজতে গিয়ে
নিজেকে হারাই
কোন খেয়ালে!

আঁধার এলে ভয় করে যে,
সে, জানি, থাকে—
নিকষ আঁধারেই!
যার কাছে রুক্ষ আমি,
খসখসে খুব……
নিবিড় এক সবুজের মাঝে
খুঁজে ফিরি তারেই!
পথ হাঁটি যত,
হারায় যে পথ!
ধরবে তারে, পথ চেনাবে—
সাধ্যিটা কার!

তিন।
আমার যে ঘর—
বইয়ের মাঝে!
সে থাকে তো
মনের মাঝে!

ঝর্ণা তুমি—
কোথা থেকে যে জল এসে যায়,
কোথায় যেয়ে মেশে
কখনো তুমি ভেবেছিলে কি?

আমি তো হায় তলই কেবল
বাতিল কুয়োর…..
হাজার বছর কাটল, তবু
একই জলে একই আছি!

কেউ ভালোবাসেই হারিয়ে যেতে,
কেউ কাছে আসে সরতে দূরে—
এর বাইরেও মানুষ আছে!
অমন মানুষ বাঁধতে যে হয়
কাছে টেনে, ভালোবেসে, হৃদয়বোধে।
ভালোবাসার সুর যে ওরা ঠিকই বোঝে
কৃতজ্ঞতায় কিংবা প্রেমে।

ভালোবাসে যারা,
আর
যাদের জন্য ভালোবাসাটা
সবাইকে রাখতে যে হয়—
খুব যতনে মনের মাঝে!

বিশ্বস্ত এই আকাশটাতে, ঝকঝকে রোদ তাতালে পরে
ভিজব আবার—দুজন মিলে।
তবু ভালোবাসারা থাকুক ভাল
—প্রার্থনা এ-ই!